শিবনারায়ণ রায়কে বাঙালি বোধকরি সে ভাবে নেয়নি। অন্তত আমার পাঠ অভিজ্ঞতা তো তাই বলে। আমি ওনার নাম প্রায় বহু বছর জানতাম না। এ লজ্জা আমার ব্যক্তিগত না সমষ্টিগত বলতে পারি না। সে প্রসঙ্গ থাক। অকারণ স্বঘোষিত জ্ঞানীগুণীদের চটিয়ে লাভ নেই। মজার কথা হচ্ছে, মানুষটাকে পড়া মানে নিজের মুখোমুখি বাবু হয়ে বসা। মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমতা সে চিন্তা করতে পারে। সেই গর্বটা সানন্দে অনুভব করতে পারা যায় এমন মুষ্টিমেয় যে কয়েকজন মানুষকে নিজের ভাষায় পড়লে, ইনি তাদের মধ্যে অবশ্যই অগ্রগণ্য একজন।
Suvajit এর সাথে কথা হচ্ছিল। পূর্বপঠিত এই প্রবন্ধটা ওর সদ্যপাঠে আবার আমার কাছে জীবন্ত হয়ে ধরা দিল নতুন করে। মনে হল আম খেয়ে মুখ মুছে কি লাভ... দেওয়ার চেষ্টা করি... শুভজিতকে অসংখ্য ধন্যবাদ আবার সামনে আনার জন্য। কয়েক ছত্র দিলাম...
“কিন্তু এ লেখকদের কাছ থেকে তাঁরা না পান কোনও গভীরতর জীবনবোধ, না কোনও বিকাশশীল সংগতির ইঙ্গিত, না কোনও সৃজনধর্মী মুক্তির আস্বাদ। এঁদের দৌড় ধরতাই বুলি পর্যন্ত। যে নিজে ভাবেনি সে অন্যকে ভাবাবে কি করে? যে নিজে ধনী নয়, অন্যকে সে কোন সম্পদের অংশ দেবে? এ জাতীয় লেখক শুধু সাময়িক বাহবা লুটে এবং সে বাহবা ভাঙিয়ে কিছু স্বাচ্ছব্দ্য রোজগার করতে পারলেই খুশি। এঁদের আবেদন সাধারণ পাঠকদের অভ্যাসাশ্রয়ী গড্ডলবৃত্তির কাছে।“ ...
“সৎ সাহিত্য আমাদের অনুভূতিকে সুক্ষ্মতর করে, আমাদের বোধে গভীরতা আনে, আমাদের বুদ্ধির পরিশীলন ঘটায়, আমাদের বিচিত্র এবং অনেক সময় পরস্পর বিরোধী চিত্তবৃত্তির মধ্যে সঙ্গতি আনে। অভ্যাসের আড়ষ্ট সংকীর্ণতা দূর করে মনুষ্যত্বের অমিত সম্ভাবনা বিষয়ে আমাদের জাগ্রত করে তোলে। সাহিত্য পাঠে আমাদের মন সরস হয়, আমাদের বিচারে ঔদার্যের সঞ্চার ঘটে, আমরা সব দেশের সব কালের মানুষের সঙ্গে আত্মীয়তা স্থাপনের শক্তি অর্জন করি।“
‘লেখক ও পাঠক’ প্রবন্ধটা পড়ার অনুরোধ রাখলাম। অনেক ধোঁয়াশা কাটবে। অনেক কিছু ভাবার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে। অনেক জটিলতাকে স্পষ্ট করবে। মানুষের দায় তো শুধু বাইরেই নয়, তার মনোজগতেও। সে দায়ভার লাঘবে কিঞ্চিৎ সাহায্য তো হবেই। pdf বানালাম। আশা করি পড়া যাবে।
BOOK LINK