খাবারের অর্ডার দিয়ে বসেই আছি। আসবে, জানি।
তবু মনে হয় দেরি হয়ে যাচ্ছে।
কোথাও কিছু দেরি হচ্ছে না জানি। হোটেলের চেয়ার টেবিল, লোকজন, কর্মচারী.... সব দেখতে দেখতে, সব একঘেয়ে লাগতে লাগতে.... জানি, বেশিক্ষণের জন্য নয়.... তবু মনে হয়, না এলেই হয় তো ভালো হত।
তারপর খেতে খেতে, অন্যের খাওয়া দেখতে দেখতে, কে বেশী সুখী হিসাব করতে করতে, জানি, এ সব তুল্যমূল্য বিচারের মূল্য, ডাস্টবিনে ফেলা ন্যাপকিনের চাইতে বেশি নয়.... তবু একটা আদুরে পোষা মন খারাপের ফুলে ওঠা লোমে হাত বোলাতে বোলাতে....... নিজেকে বলে উঠি.... ওহে নাগরিক.... ওহে গুহাবাসী..... আজ কত দামে বিকালে হে..... তোমার মালিক তুষ্ট? কে সে? সময়, না অন্তর্যামী?
হোটেলের বাইরে এসে দাঁড়াই। দারোয়ান সামাজিক পার্থক্য বুঝিয়ে পোষ্য বেড়ালের লোমে হাত বুলিয়ে, তাকে আমোদ দিয়ে বলে, আপনি.... আপনিই এ জগতে ঈশ্বরের দূত জাঁহাপনা.... আমরা গোলাম.....
শিঙ্গিমাছের মত বিবেক ছটফট করে ওঠে। কাঁটাও ফোটে হয় তো। নিরুপদ্রব আকাশ আর সমাজের পরিচিত গলির মধ্যে খুঁজি গীতা, কোরাণ, বাইবেলের শাশ্বত বাণী..... কিছুর যোগ্য নই জানি.... তবু অন্ধকার গলিতে হারিয়ে যেতে যেতেও, নষ্ট হতে হতেও... সেই সব মেয়েরা..... মায়ের মুখ মনে করে রাখে... কান্নায় সযত্নে বুকে তুলে রাখে.... ফেরার ওই তো একমাত্র ঠিকানা....
কোথাও পৌঁছাব না, জানি.... ফিরতে হবে একদিন.... ফিরতেই হবে.... মাটি বাতাসে ফিরে যেতে হবে....
হয় তো তখন গঙ্গার কোনো পরিত্যক্ত ঘাটের শ্যাওলা মাখা শেষ সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসছে একটা শামুক.... যার ভেজা গায়ে লেগে চাঁদের আলো.... মাটিতে ডুবে মাটি হবে বলে... সে ধীর গতিতে উঠে আসছে..... হয় তো আমিই.... ফিরে আসতে হবে.... আসতেই হবে.....