বসন্তকে বলেছিলাম, আমার কাছে এসো না। বড্ড বেশি শৌখিন তুমি, আমার সাথে বনবে না।
শুনল না। ষড়যন্ত্র করল আমার জানলার পাশের আমগাছটা। এক ঝাঁক মুকুল সাজিয়ে, গন্ধে মাতিয়ে, ওঁত পেতে বসেছিল আমারই জানলার পাশে।
জানতাম কই? ভোরবেলা জানলা খুলতেই হল অতর্কিতে আক্রমণ। বসন্ত এল ঘরে। বসল আমারই বিছানায়, আমার মুখোমুখি।
বললাম, কি চাও?
তাকিয়ে হাসল। নিষ্ঠুর হাসি। বুকের ওপর যে পাথরটা চাপা দেওয়া থাকে, এক ঝটাকায় সরিয়ে ফেলল। নীচে স্মৃতির জলাধারা। নীরব স্রোতস্বিনী।
আমার চোখে ঘনালো করুণ মিনতি। বলতে গেলাম, থাক না।
বলার আগেই হাত দিল ঠান্ডা জলে, স্মৃতির স্রোতধারা হল শিহরিত।
বসন্ত ডুব দিল। আমি রুদ্ধশ্বাসে তীরে। একটু পরে সে বিস্মৃতির তলদেশ থেকে চেতনায় উঠে আসল। সাথে আনল কিছু নুড়ি, কিছু মাটি। আমার বুকের ভিতর ধ্বস নামল। আছড়ে পড়লাম ওগুলোর ওপর। বললাম, নিও না!
বসন্ত হাসল। নিষ্ঠুর না। বিজয়ীর গর্বিত হাসি।
বলল, আমি নিই না। ওলটপালট করি। ডাক দিয়ে যাই কালবৈশাখীকে। তৈরী থেকো।
(ছবিঃ সুমন দাস)