সেই যে পাখিটা, যার গান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর খাঁচায় পুরে শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল।
শুনলাম সে নাকি মরেনি। দিব্যি রাজার পোষ মেনে গিয়েছে। রাজা যা বলায়, তাই বলে। যে সুরে গাওয়ায়, সেই সুরেই গায়। কাগজে যা ছেপে দিতে বলে, তাই ছেপে দেয়। রাজা খুশী। পাখি খুশী। আমলারা খুশী।
তবে নিন্দুকে বলে পাখিটা নাকি রাতদিন ভীষণ রেগে থাকে। কেন রেগে থাকে জিজ্ঞাসা করলে আরো রেগে যায়। নিন্দুকে জিজ্ঞাসা করতে গিয়েছিল, মশায়, এবার শুনলাম গেলবারের তুলনায় আরো আড়াইশো খানা বেশি দুগ্গা পুজো হচ্ছে খোদ শহরে। তো এই নিয়ে আপনার কী বক্তব্য?
পাখি প্রশ্নটা শুনে রাজার ঘরে উড়ে গেল। আর বাইরে এলো না। অনেকক্ষন পর যখন সবাই চলে যাচ্ছে, পাখি উড়ে এসে বেজার মুখে বলল, বন্যার অবস্থা ভালো নয়। এখনই গিয়ে দোকানবাজার করে নাও। এরপর আবার কখন কী ঘটে যায়, মানে বন্যা, ভূমিকম্প আরকি, বলা তো যায় না!
পাখি উড়তে উড়তে সারাটা ঘর বলতে লাগল,
ঘর হবে, দোর হবে, সুখ হবে, মজা হবে, পুজো হবে, নাচ হবে, গান হবে, সভা হবে... সব্বাই সুখী হবে.... সুখী হবে... সুখী হবে...... সুখী হবে....
এই বলে পাখি সুখের সম্পাদকীয় লিখতে বসল। এমন সময় রাজার চরণামৃত নিয়ে মন্ত্রী এলো। পাখি মাথাটা নীচু করে বলল, দাও..দাও...... এনাদেরও দাও.... আপনারাও নিয়ে যান... .মনে শান্তি পাবেন। আসুন.... আসুন.... নিয়ে যান, নিয়ে যান।
সবাই যখন মাথাটা নীচু করল, পাখি গিয়ে তার নীল ডানা বুলিয়ে দিল। ম্যাজিকের মত সবার চোখে ফুটে উঠল কাশ। কানে বেজে উঠল ঢাক।
পাখি কেন জানি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার মস্তিষ্কের উপর বসল। দুঃখের মধ্যে সত্যিটা ভালো, না সুখের মধ্যে মিথ্যাটা.... হিসাব করতে করতে মোহরের থলে এসে সামনে পড়ল। পাখি দুটো ডানা মেলে বলল, ডানা সত্য, দৃষ্টি নয়।