সে এলো
বিনা সংকোচে
বিনা কৌতুহলে
বিনা আড়ম্বরে
তার শাদা শাড়ি
তার পায়ে ধুলো
তার পাকা চুলে
জীবনের পোড় খাওয়া সব গল্প
তার এক হাতে ফুলের সাজি
আরেক হাতে গানের তাল
তার চোখের উপর আনন্দ
তার মুখের উপর আনন্দ
তার গলায়
আনন্দ ধরে রাখতে না পারার
আনন্দ গান
তাকে যদি আমাদের শহরের রাস্তায় দেখতাম
নির্দ্ধিধায় বলতাম, ও মা, এ-তো ভিখারি গো!
হয় তো বা পাগলও তার সঙ্গে!
কিন্তু তাকে এই আমাদের শহরে না
দেখলাম বৃন্দাবনে
এক ভাঙা মন্দিরের সামনে
নাচতে নাচতে গাইছে
তার নাকি সুরে
ভাঙা মন্দিরের দেওয়াল
শ্রীবিগ্রহে রাধারাণীর চোখ
ডুবে যাচ্ছে
জোয়ারের জলে যেমন
পাড়ের বাঁধানো ভাঙা সিঁড়িটাও ডোবে
তারও তখন ছলছল প্রেমে ডোবা চোখ
বৃদ্ধা সে। যুবতী সে।
নারী সে। গোপী সে।
মানুষ সে। আনন্দ সে।
পরিপূর্ণ সে।
অনন্ত ব্রহ্মাণ্ডের গভীরতম সত্যকে
সে চিনেছে বাঁশিতে
তার অভাব আছে
তার আনন্দ আছে
তার সমাজে অ-প্রতিষ্ঠা আছে
তার স্বচিত্তে প্রেম-প্রতিষ্ঠা আছে
তার করুণা চাওয়ার বাধ্যতা আছে
তার করুণা করার সামর্থ্যও আছে
আমার গভীরে
আমার যে দোসর
আমাকে বলল,
তাকিয়ে দেখ ভিখারি
তাকিয়ে দেখ!