সম্পর্ক, সে তো মন্থন। জীবন মন্থন। শুধু কি অমৃতই উঠবে বলো? বিষও উঠবে। ধৈর্য ধরো। বিষকে ধারণ করে মহাদেব। মানে মহাকাল। কালের হাতে ধীরে ধীরে ছেড়ে দাও বিষ। নিজে ধারণ করতে যেও না। নিজে হজম করতে যেও না। শেষ হয়ে যাবে। সে বরং সময়ের হাতে থাক। বিন্দু বিন্দু করে দিয়ে দাও। অল্প অল্প করে নির্ভার হও।
অমৃত? নিজে পান করবে বলে লোভ কোরো না। অমৃত মানে আশা। বেঁচে থাকার। সুস্থ থাকার। কিছু একটা করার। হয় একটা টবে একটা ফুল ফোটানোর ইচ্ছা, কিম্বা এক চিলতে জমির উপর একটা একচালা ঘর গড়ার সাধ। সে-ই অমৃত। তাকে চারিয়ে দাও। মেঘের মত সজল হোক সে। শুষ্ক ক্ষেতে বীজকে বলুক জাগো, যে বীজ মৃত্যুর অন্ধকারে মিশে যাচ্ছিল। চিত্তের মৃত্যু বিষাদে। তাকে বাঁচাও। অমৃতে। আশা মানে অমৃত। যা প্রাণে আশার সঞ্চার করে তা-ই অমৃত।
সম্পর্ক মানেই তো মন্থন বলো। জীবনের। প্রাণের। বিষ পেলে বলে কি অভিমান করে জঙ্গলে যাবে? যেও না। মহাকালকে স্মরণ করে তুলে দাও তার হাতে।
সুখ সীমাবদ্ধ। শান্তি অসীম। জীবন মন্থন হোক, সম্পর্কে। বিষ আসুক, কি অমৃত, শান্ত থাকো। একটা দিনও যেন ব্যর্থ না যায়।
একদিন মন্থন শেষ হবে। দেখবে কেউ কোথাও নেই। সবটুকু জুড়ে তুমিই ছিলে আমি হয়ে। আমিই ছিলাম তুমি হয়ে। সব বিষ অনন্তকাল ধরে কণ্ঠে নিয়ে আছে মহাকাল। সব অমৃত অনন্তকাল ধরে হৃদয়ে আছে মহাশূন্য। সবাই অপেক্ষা করছিল, তোমার জেগে ওঠার। তুমি জেগে উঠে জানবে, চৈতন্যের আলোয় সব আলোকিত। সে চৈতন্য কার? না তোমার, না আমার! তুমি আমি সে চৈতন্যের। সাগরেরই ঢেউ। ঢেউয়ের সাগর নয়।
(ছবি: Debasish Bose)