Skip to main content
ওষুধের বাক্সটা খুলে দেখছিলেন মল্লিকবাবু। মোটামুটি সব ওষুধেরই এক্সপায়ারী ডেট পার হয়ে গেছে। 
মল্লিকবাবু পোস্টমাষ্টার ছিলেন। রিট্যায়ার করেছেন পাঁচমাস হল। আজ আবার কল্যাণী মানে ওনার স্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী। কাল বাজার থেকে ফেরার পথে ফুল নিয়ে এসেছেন। এই নিয়ে সাত বছর হল। 
মল্লিকবাবুর ছেলে সংসার পেতেছে দিল্লীতে। এই মধ্যমগ্রামে আসেনি তিন বছর হল। 
মল্লিকবাবুর বাগানের শখ। মল্লিকবাবুর কুকুরের শখ। মল্লিকবাবুর পান-জর্দার শখ। উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের শখ। বিলিতি সিগারেটের শখ। 
এখন ওগুলো সব অতীত। এখন ওনার শখ, রোজ ফোন থেকে একটা করে নাম্বার ডিলিট করা। 
আজ সকাল থেকে মল্লিকবাবুর মনটা ভীষণ হালকা। আজ পবিত্রর নাম্বারটা ডিলিট করবেন। পবিত্র ওর যাদবপুর থেকে ইঞ্জিনীয়ারীং পড়া একমাত্র ছেলে। বউমাও। 
ফোন নিয়ে হাতে করে বসলেন। P...P...P...এই তো, প্রথম নামটাই। আগে K তে ছিল.. Khoka. এখন P তে। P for Pabitra. 
আচ্ছা পবিত্রর পর কি নাম? হুঁ.....আচ্ছা...Pakrashi...কে যেন? কে..
উঁহু নামটা মনে আসছে না কেন? উফ্ কি জ্বালা..কে যেন পাকড়াশী..৯৩৩ দিয়ে শুরু....আরে কে যেন??
রাত বারোটা। মল্লিকবাবু মশারির মধ্যে ফোন নিয়ে। কিছুতেই মনে পড়ল না....কে পাকড়াশী। 
আচ্ছা, বাবুকে একবার ফোন করলে হয় না? বাবু মানে পবিত্র। হ্যাঁ সেই বেশ। মল্লিকবাবুর চোখদুটো উজ্জ্বল হয়ে উঠল। এখন ফোন করা ঠিক হবে? থাক। কাল ভোরে করব। না না। এখন ইয়ার এন্ডিং। বাবুর ভীষণ চাপ। মল্লিকবাবু মোবাইলে ক্যালেণ্ডার খুললেন। নাহ্, দশ দিনের আগে ফোন করা যাবে না। 
মল্লিকবাবুর চোখ মোবাইলের স্ক্রীনে। P A B I T R A... P......A......B.....I...T.....R.....A
স্ক্রীনটা বন্ধ হয়ে গেল! বিরক্ত লাগে। মল্লিকবাবু সেটিংসে গিয়ে স্ক্রীন টাইম বাড়ালেন, পনেরো মিনিট।

মল্লিকবাবু ঘুমিয়ে পড়েছেন। পাশে জ্বলা মোবাইল। PABITRA....