Skip to main content

sabdhane

 

 

সতেরো বছর লোকাল ট্রেনে বাদাম বিক্রি করা মানুষটা, কোলনের মারণরোগের শেষ কেমোটা, সরকারি হাস্পাতাল থেকে নিয়ে ফেরার সময়, শ্রাবণের আকাশে, মেঘ ছেঁড়া চাঁদ দেখছিল, ট্রেনে, জানলায় মাথা রেখে। তার মনে পড়ছিল তার বিয়ের দিনের কথা। তিরপল ছিঁড়ে চাঁদ এসে পড়েছিল ডেকরেটার্সের বাসনকোসনের উপর।

পাশে বসা মানুষটার রোগা হাতের হাড়গুলো ধরল আঁকড়ে। যেতে চায় না। তবু যেতে হবে। অথচ জীবনে কোনো অভিযোগ ছিল না। আরো একশো বছর এইভাবে ট্রেনে বাদাম বিক্রি করে, ফি বছর টালি সারিয়ে কাটিয়েই দিতে পারে, পাশের মানুষটাকে নিয়ে। কিন্তু জীবন অতটা সময় দিলে তো?

টোটোতে যেতে যেতে বলল, দাঁড়াও।

রাস্তার ধারে, প্লাস্টিকের টেবিল পেতে বিক্রি হচ্ছে ফুলের গাছ। একটা গাছেই ফুল ধরেছে। রঙ্গন। বাকি গাছের ফুল দেখে যাওয়ার সময় নেই।

তুমি বোসো.... আমি যাই....

আবছা সিঁদুরের নীচে দুটো চোখ, করুণ আস্কারায় বলল, যাও.... সাবধানে।

কথাটা কানে বাজল। সাবধানে! আর কত! আর কেন!

কিন্তু কথাটা বিঁধে রইল বুকে।

বছর তিনেক পর। সেদিন শ্রাবণ। সেদিন পূর্ণিমা। সেদিন বৃষ্টি। উঠানে বৃষ্টির জলে থিরথির করে কাঁপছে রঙ্গন।

সিঁদুর মোছা কপালের নীচে দুটো চোখ বিহ্বল হয়ে তাকালো খাটের পাশের দেওয়ালে ল্যামিনেশন করা ছবিটার দিকে, তখন সে তিরিশ...তখন সে উত্তাল..... তখন সে আশ্রয়.... বেড়া......

অতীত পেরিয়ে সজল বাতাসে মিশে এলো কণ্ঠস্বর.... নিজেরই.... থেকো সাবধানে....

সে বলল, তুমিও.....ওই রঙ্গনের মত, উজ্জ্বল।