Skip to main content
 
 
        কনকদুর্গা শাশুড়ির মার খেয়ে হাস্পাতালে। দোষ, শবরীমালায় ঢোকা। ডাক্তার স্ক্যান করে মগজের পরিস্থিতি দেখবেন। 
 
        খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। অগ্রদূতেরা চিরকালই মার খায়। এক্ষেত্রে আয়রনি হচ্ছে, নারীদের অধিকারে একজন নারী জীবন ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসতে আরেক নারীরই রোষানলে পড়া। শাশুড়ির বয়স যদি ১০০ বছরও ধরেনি তর্কের খাতিরে, তার মানে তিনি 1919 সালে জন্মেছেন। তদ্দিনে রামমোহন, বিদ্যাসাগর ইতিহাস। শত শত নারী এই শত বছরে ভারতের নানা কর্মক্ষেত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তবু তিনি তার বিশ্বাসকে প্রশ্ন করবেন না। কেন করবেন না? তার সংস্কার। তিনি খালি পায়ে হাঁটার সংস্কার ছাড়বেন, উনুনে রাঁধার সংস্কার ছাড়বেন, লিখতে পড়তে না পারার সংস্কার ছাড়বেন, কিন্তু ডমিনেটেড হওয়ার সংস্কার ছাড়বেন না। ওতে যেন identity crisis তৈরি হবে। এ এক অদ্ভুত কথা। আমার পরিচয় অধীনস্থতাতেই। সে সমাজের হোক, ধর্মের হোক, ইজিমের হোক কি যারই হোক। অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে। কিন্তু সে আলাদা কথা। 
        ভয় থেকে ধর্ম। ধর্ম - দুর্বলতার রক্ষাগার। ভাঙতে গেলেই অস্তিত্বসংকটের ভয়। ভয়ই যখন আত্মপরিচয়, সেটার সংকটে বিপদের আশঙ্কায় মারমুখ হয়ে ওঠা, অবশ্যই যা ডিফেন্স মেকানিজম। তারপর লেগে যা, লেগে যা নারদ নারদ....
        আসলে ভক্তির ঈশ্বর আর ভয়ের ঈশ্বরের সহাবস্থান কোনোদিন হয়নি। ঈশ্বর-প্রেমিকের ঈশ্বর শুধু মন্দিরে নেই। তিনি আকাশে, বাতাসে, মানুষে, কুকুরে, বেড়ালে। তাকে নিয়ে গোল নেই। কিন্তু আত্মপ্রেমিকের ঈশ্বর শুধুই মন্দিরে মসজিদে গীর্জায় প্যাগডায়। যে নিজের স্বার্থের উত্তর চায়, সে সব কিছুকেই স্পষ্ট করে চায়। স্থুল করে চায়। যেমন, যাকে খুব ভালোবাসি তার সম্বন্ধে বলতে বললে, খেই পাই না, কারণ সে আমার সর্বস্ব জুড়ে আছে, তাকে ততটা স্থূল করে পাই না। কিন্তু যার সাথে শুধু পরিচয়ের সম্পর্ক, কাজের সম্পর্ক, সৌজন্যের সম্পর্ক, তার সম্বন্ধে চারটি ভালো কথা বলা খুব কঠিন কাজ কিছু নয়। 
        কুম্ভই বলো আর শবরীমালাই বলো। মানুষ জানে, সব জায়গায় একটা ডিল চলে। ঐশ্বরিক চুক্তি। শুনেছি নাকি চারকোটি মানুষ হবে কুম্ভতে। মানে এই চুক্তিটা আমাদের সংস্কারবদ্ধ। আমাদের পরিচয়। আমাদের কৃত পাপের থেকে মুক্তির বাইপাস। দাও ডুব, পাও মোক্ষ। এর সাথে যুক্ত হল ঐতিহ্য। তার সাথে যুক্ত হল গর্ববোধ। ব্যস। পাক্কারঙ। তুমি কে হে সুপ্রিম কোর্ট? মানুষের মুক্তির আইন তুমি বানাতে পারবে? তুমি যা বলো তা ম্লেচ্ছ। অর্থাৎ, পাশ্চাত্যের গপ্পো। আমরা সনাতন পন্থী। সনাতন মনে প্রাচীন না, সে অভিধান বলে। সনাতন মনে যা অপরিবর্তনীয়। 
        রোগ অনেক গভীরে কনকদূর্গা, শাশুড়িকে দুষে লাভ নেই। ভালো হয়ে উঠুন।