সরোবর বলল, এসো
সে বলল, না, তুমি কেমন স্থির, তোমার বুকের মধ্যে পূর্ণচন্দ্রের ছায়া, সে কেমন ধ্যানমগ্ন, স্থির। চারদিকের এই নীরবতার মাধুর্য ভেঙে, তোমার বুকে ঢেউ তুলে কি হবে নেমে? তার চাইতে বসি তোমার তীরে।
সরোবর বলল, না, তোমায় নামতেই হবে আজ। আজ উৎসব।
- কিসের উৎসব
- না নামলে বলি কি করে?
- বেশ, আসছি, তবে আমার জন্য তোমার এই নির্মোহ শান্তি হবে বিঘ্নিত, অপরাধ নিও না।
সরোবরের বুকের উপর দিয়ে একটা বক উড়ে গেল। সরোবর বলল, দাঁড়াও।
- কেন?
- তোমার সব আভরণ, আবরণ রেখে এসো ওই তীরে।
- ছি ছি, লজ্জা!
- লজ্জা জন্মায় দ্বিধা থেকে। দ্বিধা মানে দুই। দুইতে যে ভয়!
- তবে?
- সমস্ত ভয়ের পারে যে চাওয়া, সেই চাওয়াকে জাগাও, সে ঘুমিয়ে আছে, হেলায়।
- কিন্তু দুই না হলে যে ভালোবাসা নেই!
- দুইকে রাখতে চায় অহংকার, দুইকে মিটিয়ে এক হওয়ার তাগিদকে বলে ভালোবাসা। তুমি তো জানো, তোমার চোখের জল তোমায় জানিয়েছে তো কত বিনিদ্র রাতে?
- বেশ আমি আসছি।
সে জলে নামল। সরোবরে ঢেউ উঠল না। পূর্ণচন্দ্রের প্রতিচ্ছবি এক মুহুর্তের জন্যেও উঠল না দুলে। সে বলল, কি আশ্চর্য!
সরোবর হাসল। বলল, তোমার আঁজলায় নাও আমায়।
সে নিল
সরোবর বলল, তাকাও। কি দেখছ?
- পূর্ণচন্দ্র
- একে নিয়ে ফেরো নিত্য সংসারে। দেখো যেন না দুলে যায়, না চলকে পড়ে।
- কিভাবে হবে সে অসাধ্য সাধন?
- যেদিন এই প্রতিচ্ছবির থেকে মন যাবে প্রতিচ্ছবিকে রাখার লোভে, সেদিন যাবে ভেঙে। মনে রেখো।
- কিভাবে জানব হলাম পূর্ণ?
- যেদিন তুমি সরোবর হবে, তোমার বুক জুড়ে স্থির পূর্ণচন্দ্র!
সৌরভ ভট্টাচার্য
12 November 2019