Skip to main content


রাজা সব্বাইকে ভালোবাসে। যাকে বলে ভীষণ ভালোবাসা, তার থেকেও বেশি সে ভালোবাসা। যাকে তাত্ত্বিকরা বলে অপরিমেয়।

       রাজা বললেন, আহা, আমি থাকতে তোমাদের এত কিসের ভাবনা। এত কিসের রীতিনীতি মনে রাখা। সব আমি দেখব। আমি ব্যবসা দেখব, আমি ধর্ম দেখব, আমি আইন দেখব, আমি শিক্ষা দেখব, আমি স্বাস্থ্য দেখব, আমি শিল্পসাহিত্য দেখব, আমি ক্রীড়া দেখব ইত্যাদি ইত্যাদি।

       সব্বাই বলল, আহা বেশ বেশ। এমন প্রবল আত্মবিশ্বাসী রাজা কোনোদিন কোনোযুগে কেউ দেখেছে? কেউ পুরাণ ঘাঁটল, কেউ ইতিহাস ঘাঁটল, কেউ ভূগোল ঘাঁটল, কেউ সাহিত্য। তারপর সবাই এক মত হয়ে বলল, এমন রাজা না ছিল অতীতে, না আছে কোনো কল্পনাতে।

       সব্বাই বলল, ঠিক ঠিক ঠিক।

       ক্রমে রাজাই হল ব্যবসা, রাজাই হল আইন, রাজাই হল ক্রীড়া, রাজাই হল ধর্ম, রাজাই হল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ইত্যাদি ইত্যাদি।

       ক্রমে দেশজুড়ে থাকল ভক্ত। ভক্তের ভক্ত। ভক্তের ভক্তের ভক্ত। ভক্তের ভক্তের ভক্তের ভক্ত।

       সবাই জোড়হাত। বন্ধ চোখ। স্তবিত জিহ্বা।

       ধুপের ধোঁয়া দেশের চারদিকে ঘুরে ঘুরে, ঘুরে ঘুরে তৈরি করল সুরক্ষা। সূর্যের আলো ধোঁয়ার সামনে এসে বলল, সরো।

       ধোঁয়া বলল, কেন?

       সূর্য বলল, স্পর্ধিত, জানে না যেন। দেব আলো।

       ধোঁয়া বলল, হায় হায় আত্মম্ভরি, উদ্ধতস্বভাব, মূঢ় জড়, তুই দিবি আলো.... হা হা হা.... আমাদের আলো আমাদের রাজা.....

       সবাই বন্ধ চোখ, জোড়হাত, সমস্বরে বলে উঠল, তাই তো, তাই তো, তাই তো।

       মহাকালের যিনি রাজা, তিনি স্মিত হাসলেন। সূর্যকে বললেন, মোহনায় দাঁড়িয়ে থেকো। সব নদী মোহনায় আসে, সময় হলে।