সৌরভ ভট্টাচার্য
19 January 2017
খানিক আগেই আমার দুই বন্ধু তথা ভাইয়ের কাছ থেকে উদ্বিগ্ন ফোন পেলাম সোদপুর স্টেশানে তাদের ট্রেনে এলোপাথাড়ি ইঁট ছুঁড়ছে কারা। বলতে বলতেই খবর দিল, তাদের এক বন্ধুর হাত কেটে রক্তাক্ত ট্রেনের জানলার কাঁচ ভেঙে। আরো অনেকেই আহত। ট্রেনের মধ্যে লোকে শুয়ে পড়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে, বন্ধুর ভাষায়, "যুদ্ধে যেমন দেখায়"।
খবরটা এতক্ষণে অনেকেই জেনে গেছেন, আমিও টিভিতে যা শুনলাম, তা হল এক বৃদ্ধ বাজার করে লাইন পার হওয়ার সময় কাটা পড়েছেন। যাত্রীদের ক্ষোভের কারণ বিনা ঘোষণায় কেন ট্রেন আসবে!
এত অবধিও তাও কিছুটা বুঝতে পারলাম। যদিও বাঁধাধরা একটা পথে একটা যানের চলাচল যেখানে সেখানে কতটা কার দোষ ইত্যাদি ভাবনা মাথায় না এনেই বলছি ঘটনাটা মর্মান্তিক। নিঃসন্দেহে। তবে তার এরকম ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া? তাও ক্ষুব্ধ জনতার? নিরীহ ট্রেনের লোকগুলোকেই পাথর ছুঁড়ে মার?!
আজ যদি আমার ওই ভাইটা ঘায়েল হত, তবে নিশ্চই আমার এই পোস্টটা লেখার অবকাশ থাকত না। ভাবলে শিহরিত হচ্ছি! আরো শুনলাম সেই রণক্ষেত্রেও নাকি বহু সংবেদনশীল জনতা কিছুকে প্রতিহত না করে মোবাইলে ভিডিও তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। হায় রে!!!!
আসলে ছোটার বেগটা এতজোর বেড়ে গেছে যে তাকে থামানো দায়! কাজের সকাল নেই রাত্রি নেই, অবকাশ নেই অবসর নেই। নিজের ইচ্ছার কর্তা নিজে নই আর। নিজের সময়ের মালিক নিজে নই। যোগ্যতা আছে কাজ নেই। কাজ আছে সন্তুষ্টি নেই। গতি আছে দিশা নেই। নেশায় ভুলে থাকা যায়, জেগে থাকা কি যায়!
তা এত জমছে তো কোথাও! জমছে না? তাই ঢিলটা কাউকে তো একটা মারতেই হবে, বসকে না পারি, হোতাগুলোক না পারি, ভাগ্যকে না পারি, নিজের অক্ষমতাকে, ভীরুতাকে না পারি....ওই লোকগুলোকে তো পারিই...
প্রতিবাদ করতে না পারি, নিজেকে ক্ষেপিয়ে তুলতে অসুবিধা কই..ক্ষেপলে তো আর দেখতে শুনতে ভাবতে হয় না....শুধু ক্ষেপলেই হয়..কিছুটা চাপ তো তাতেও কমে। তাই তোলো ঢিল...পাথর....