সৌরভ ভট্টাচার্য
24 February 2018
আমায় নীচে নামতে দিল না শ্রদ্ধা। ভগবানে না। বড় তে। মহতে। আমার থেকে যে ছোটো সে যখন পায়ে হাত দিয়ে আমায় প্রণাম করল, সে মনে করাল, আমার নিজের প্রতি নিজের একটা দায়িত্ব আছে। নিজেকে নীচে নামতে না দেওয়ার। নইলে তাকে ঠকানো হবে যে। প্রণামের পিছনে এতবড় একটা সত্য আছে। দায়টা ততটা প্রণতর না যতটা প্রণম্যর।
আমার মনে হয় প্রতিটা পরিবারের, জাতের একটা প্রণামের স্থান আছে। সে সেই শ্রদ্ধার কাছে নত হয়ে নিজেকে ক্ষুদ্র দীন হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে, আর বড় যে সে নিজের মহত্বে নিজেকে আরো শুদ্ধ, আরো মার্জিত করার তপস্যায় সঙ্কল্পিত হয়। দুপাশে পাড় দিয়ে গতিপথ তৈরি করে। কারণ জীবন থাকবে আর গতি থাকবে না তা তো হয় না। আবার গতি থাকবে অথচ দিশা থাকবে না তাও হয় না।
ভাঙন ধরে তখন যখন শ্রদ্ধায় ফাঁকি এসে জমে। যে প্রণত হয় সে প্রাপ্তির লোভে নত হয়, আর যে প্রণম্যের আসনে থাকে সে মানের লোভে নিজেকে সাজিয়ে রাখার ছলনায় মাতে। তখন সাধারণ একটা কথা বুঝতে সাত সমুদ্রের যুক্তি-তর্ক এসে উপস্থিত হয়। কারণ সরলতা যেখানে নেই প্রজ্ঞা সেখানে অন্ধ। প্রজ্ঞা যেখানে নেই সেই কুটিল-জটিল পথে মানুষের মনন মাকড়সার জালের মত নিজেকে আটকিয়ে নিজেকেই নিজের শিকার করে বসে। মনে হয় এইভাবেই একটা জাত, একটা পরিবার, একটা মানুষ ক্রমে দীন হয়ে পড়ে। নির্জীব, নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। শুধু শ্রদ্ধার অভাবে। নইলে জ্ঞান বলতে যা বিকোয়, তার অভাব তো কোনো কালেই ছিল না। কি সেদিন, কি আজ। নইলে সোজা দাঁড়াতে এত মাথা ঠুকছে কেন আজ?