Skip to main content
prabha atre

 

প্রভা আত্রে। আজ জন্মদিন। প্রথম শুনি, "কৌন গলি গেয়ো শ্যাম", ঠুমরি। তারপর দেশি। তারপর আরো আরো আরো। এমন স্নিগ্ধ, শান্ত, গভীর গায়কী খুব কম শোনা যায়। ইউটিউবে বেশ কিছু ওয়ার্কশপের লিঙ্ক পাওয়া যায় ওঁর। যেখানে উনি নতুন প্রজন্মকে মার্গসংগীতের নানা দিক নিয়ে বোঝাচ্ছেন, প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। সেখানেও দেখেছি কি স্বচ্ছ ধারণা, গভীর চিন্তাভাবনা অ্যাকাডেমিক দিক থেকেও, শ্রদ্ধাবনত হয়েছি। 

    চারদিকে যখন কি এক হইহই রইরই চলে, তখন প্রভাজী'র গানের সামনে এলে মনটা প্রসন্ন হয়ে যায়। শান্ত হয়ে যায়। আমার কাছে ইনি যেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের নীলিমা সেন। 

    নীলিমা সেনের গানের মধ্যে যে অনাড়ম্বর আত্মনিবেদন, যে শান্ত গভীর রস মনকে ধীরে ধীরে সব চঞ্চলতাকে সরিয়ে ভিতরের দিকে ডেকে নিয়ে যায়, যেখানে কোনো তর্ক নেই, উচ্ছ্বাস নেই, বিষাদ নেই, শোক নেই, মোহ নেই, ক্ষোভ নেই - সেখানেই দাঁড়িয়ে একদিকে প্রভা আত্রেজী আরেকদিকে শ্রদ্ধেয়া নীলিমা সেন। 

    প্রভাজীকে আমি কোনোদিন সামনাসামনি শুনিনি। কিন্তু শ্রদ্ধেয়া নীলিমা সেনকে শুনেছিলাম একবার, জোড়াসাঁকোতে, পঁচিশে বৈশাখে। "ক্ষত যত, ক্ষতি যত" গাইছেন। সারা শরীর স্থির। শুধুমাত্র আঙুলের কড়ে তাল ফিরছে। চোখ দুটো অর্ধনিমীলিত। সারা ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গন কি মাধুরীতে ভেসে যাচ্ছে। 

    "কি হল না, কি পেলে না, কে তব শোধেনি দেনা / সে সকলই মরীচিকা মিলাইবে পিছে"। 

    এ কথা নীলিমা সেন তো শুধু কণ্ঠ দিয়ে গাইছেন না, এ গান সমস্ত জীবন দিয়ে গাইছেন। তাই সুর, কথা, বিশ্বাস - জীবনযাপনের ছন্দের সঙ্গে মিলে শ্রোতাকে বলছে, এ সত্য, সত্য, এ সত্য। 

    নীলিমা সেন মাত্র চার বছরের বড় প্রভা আত্রেজী থেকে। দুজনের গায়কী, মেজাজ, উচ্চারণ আমার বোধে কিভাবে এক হয়ে যায় সে আমি জানি না। দুই সাধিকার দুই ভিন্নধারার সঙ্গীতে প্রাণে কি শান্তি পাই, তাও স্পষ্ট করে বোঝাই এমন ক্ষমতাও আমার নেই। 

    প্রভাজী আপনি আরো দীর্ঘদিন সুস্থ থাকুন। নতুন প্রজন্মের কাছে এমনইভাবে এক অনুপ্রেরণা হয়ে থাকুন। এবং সর্বোপরি আপনার সাধনায় ভারতীয় মার্গসংগীত আরো আরো নতুন প্রজন্মের ধারায় বাহিত হোক, শুদ্ধতায়, স্বমহিমায়। আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম দুজনের প্রতি।

prabha02