পয়লা জানুয়ারী। গিন্নী কম্বল ছেড়ে বেরিয়ে, খাট থেকে নেমে, দেওয়ালে ঝোলানো রামকৃষ্ণদেবের ছবিতে প্রণাম করে বললেন, হ্যাঁ গো, আজ তো কল্পতরু উৎসব, চলো না গো আমরা কাশীপুর মঠে যাই। কদ্দিন যাই না।
কত্তা কম্বলের ভিতর থেকেই বললেন, সে হবে না গো গিন্নী, মঠ বন্ধ।
গিন্নী, “অ্যাঁক! কেন?” বলে আবার খাটে বসে পড়ে বললেন, মানে, কেন?
কত্তা বললেন, মহারাজেরা স্বপ্ন পেয়েছেন… ঠাকুর বলছেন, ওরে এই একশো পঁয়ত্রশি, ছত্রিশ বছর ধরে “তোমাদের চৈতন্য হোক” বলে বলেও যদি একখানা মাস্ক পরাবার চৈতন্যই না আনতে পারি, তবে ও উৎসব টুৎসব বন্ধই থাকুক বাবা… কাউকেই এসে কাজ নেই।
গিন্নী বললেন, ও, কিন্তু মা তো আছেন বলো… তিনি তো যে মাস্ক পরে তারও মা, যে না পরে তারও… তাই না?
কত্তা বলল, সে জানি না গো, তবে তিনি গোঁ ধরে চলতে বারণই করতেন বলে শুনেছি, মাস্কটাস্ক না পরে গেলে খুব একটা খুশী হতেন বলে মনে হয় না।
গিন্নী হতাশ হয়ে বিছানায় আবার লাট খেয়ে পড়ে বললেন, তবে আমরা আজ কি করব?
কত্তা বললেন, তুমি কল্পতরু হলে পারো আজ… রান্নাঘরে ঢোকো, আমরা ভক্তেরা আসছি, আমাদের দুই ছানাকে জাগিয়ে… যা চাইছি দিলেই পারো…
গিন্নী ধড়মড় করে বিছানা ছেড়ে উঠে বললেন, থাক… কারোর আজ কল্পতরু হয়ে কাজ নেই… বেলায় সুমীদের বাড়ি গেলে হবে একটা, ওদের ডগিটা নাকি একটা বাচ্চা দিয়েছে… খুব কিউট নাকি…
কত্তা হাই তুলে বললেন, বেশ কল্পতরু না হোক, জীবে প্রেমই হোক না হয়… কিন্তু তুমি আবার চেয়ে বোসো না… অত প্রেমের ঝক্কি সামলানো আমার এই ওয়াক ফ্রম হোম করতে করতে হবে না বাপু…
গিন্নী বলল, না না, সে আমি চাইব না... তবে বলছিলাম কি, আজ বাইরে খেলে হয় না….
কত্তা একবার গিন্নীর মুখের দিকে, একবার দেওয়ালে ঝোঝুল্যমান ঠাকুরের মুখের দিকে তাকিয়ে গাইলেন, মন চল নিজ নিকেতনে….