সৌরভ ভট্টাচার্য
3 April 2019
ফোনটা হাত থেকে লাফিয়ে পড়ল মাটিতে। মুখ থুবড়ে। পাশের থেকে একজন বলে উঠল, আহা, লাগল?
মানে ফাটল?
ফেটেছে মানে? মাল্টিপল ফ্র্যাকচার। উপরের অবিদারি কাঁচ ভেঙে চুরমার। যদিও স্ক্রিণে একটা আঁচড়ও নেই। মনে মনে বললুম, যাক ১০০/- টাকার উপর দিয়েই গেল। মানে শুধু আরেকটা মিছিমিছি অবিদারি কাঁচ কিনে সাঁটালেই হবে।
সে ভ্রম কাটল ঘন্টা খানেক পর। ফোনের সুইচ চিপে স্ক্রিণ অন হতেই দেখি এ যে শান্তিপুরের তাঁতের শাড়ির পাড়। এরকম একটা শাড়ি কে যেন পরে এসেছিল কলেজের শেষ সরস্বতীপূজোয়। কিরকম রঙ? বোঝাই কি করে? জামের কলজেটা চিরলে যেমন রঙ, এ রঙ তার চাইতেও গাঢ়। সারা স্ক্রীণ জুড়ে কয়েকটা চওড়া দাগ, কয়েকটা সরু। মনের মধ্যে কি তোলপাড়। স্মৃতিসুখ আর বৈষয়িক দুঃখের যুগপৎ মঞ্চে আগমন। এদিকে তাঁতের শাড়ির পাড়, কার যেন চোখ, কার যেন হাসি, কার যেন ঢেউয়ের মত চারপাশ সুগন্ধিত করে ভেসে যাওয়া... এদিকে আমাজন, ফ্লিপকার্ট হাস্যমুখে আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি... এসো বাছাধন... ব্যাঙ্কের কার্ড ইত্যাদি গুছিয়ে বসো.....
অগত্যা প্রেম ও অপ্রেম, হৃদয় ও বিষয় যে একই তারে জীবনে বাঁধা এ নিয়ে সংশয় রইল না। গভীর জীবন দর্শন এসে উপস্থিত হল। বসন্তের হাওয়ায় কালবৈশাখির বেগ লাগল। এরপর আমার আশেপাশে কাদের যেন নাম.. রেডমি ফোর.. ফাইভ.. সিক্স... সেভেন.... স্যামসাঙ... নোকিয়া... অপ্পো.. অনর.. র্যাম... বত্রিশ জিবি.. চৌষট্টি জিবি..
আমি এসব শুনতে শুনতে তাঁতের শাড়ির পাড়ের দিকে তাকিয়ে ভাবছি.. কি যেন নাম ছিল তোমার... সুলোচনা.. সুজানা.. সুচরিতা...???