রাগ হবে না, তাই কি হয়? কিন্তু ছোটোখাটো সব বিষয়ে রাগ কি ভালো? বড় বড় মানুষেরা ছোটো-ছোটো ঘটনা, যা অবশ্যই রাগ হওয়ার জন্য যথেষ্ট, সে সব কী করে সামলাতেন পড়তে আমার বেশ লাগে।
আজ শ্রীরামকৃষ্ণ পার্ষদ, স্বামী শিবানন্দজীর একটা স্মৃতিচারণ পড়ছিলাম। সেখানে উনি স্বামী বিবেকানন্দকে নিয়ে বলছেন,
"স্বামীজি খুব witty ছিলেন। কেউ কিছু ভাঙলে, বা শব্দ করলে বলতেন, ---- পেরেছ? ---- না যাব?"
কথাটা পড়েই আমার বেজায় হাসি পেল। সেই তো, রাগার কারণ তো থাকতেই পারে, কিন্তু তাকে এইভাবে ঘুরিয়ে দেওয়া? এই তো আসল বেঁচে থাকার শিক্ষা।
স্বামী মাধবানন্দজীর হাইপাওরারের চশমা। সেটা টেবিলে রাখা ছিল। ওঁর শিষ্যের হাত লেগে সেটা ভেঙে যায়। শিষ্য তো ভয়ে কাঁটা। এই বুঝি কিছু বলেন, এমনিতেই ভীষণ রাশভারী মানুষ। তো স্বামী মাধবানন্দজী জিজ্ঞাসা করেন, কী ভাঙল রে?
শিষ্য বললেন, চশমা।
স্বামী মাধবানন্দজী শিষ্যের অবস্থাটা অনুমান করে বললেন, তা স্বামীজি কী বলতেন জানিস তো...এগুলো তো এইভাবেই যাবে। নাকি তুই ভেবেছিলি ওগুলো টিবি ম্যালেরিয়া হয়ে যাবে।
নিত্য জীবনে, এই ছোটোখাটো রাগ, বিরক্তিগুলো ভীষণ সমস্যার। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় তেমন কিছু নয়, কিন্তু এই স্বভাবটাই ধীরে ধীরে স্বভাবের সব মাধুর্যটুকু শুষ্ক করে ফেলে। বড় বড় জীবনের এই ছোট ছোটো ঘটনাগুলো মনে পড়ে গেলে অনেকটা সামলে নেওয়া যায়, এই আরকি। মোক্ষটোক্ষ আর কে চায়? জীবনটায় কয়েক বিন্দু মাধুর্য অবশিষ্ট থাকলেই কেল্লাফতে।