এই যে আমি হালিশহর স্টেশানে এসে বসলাম। ট্রেন ধরব বলে। বইমেলা আসছি।
এখন ট্রেনে উঠব। শয়ে শয়ে মানুষ। কেউ কাউকে চিনি না। আমি হকারদের দেখব। কি চটি পরেছে। কি জুতো পরেছে। সারাদিন এত ট্রেনে ট্রেনে ঘোরা। টিভিতে যারা বিজ্ঞাপন দেয়, তারা তো মিথ্যাকথা বলে। তারা তো জানে না হকারে কোন চটি পরে। আদতে কোন চটি সত্যিই টেকসই।
বাদাম বিক্রি করতে করতে কামরার চারদিকে তাকাবে। খদ্দের খুঁজবে। চীৎকার করে বেচতে বেচতে, ট্রেনের হাতলে হাতলে হাঁটতে হাঁটতে, শ্বাস নেবে, তাকাবে খানিক ক্লান্ত। আবার হাঁটবে। স্টেশানে নামবে। আবার পরের কোনো ট্রেনে উঠবে। ওরা তো যায় না কোথাও।
তারপর শিয়ালদায় গিয়ে মেট্রোতে উঠব। সেখানে অন্যরকম মানুষ। সেখানে কথা নেই। আমার ভালো লাগে না মেট্রোতে যেতে। সময় বাঁচাতে উঠব। তবু।
বইমেলায় ঢুকব। আমি বইমেলায় আসি মূলত কবিতা খুঁজতে। কয়েকজন সুবিখ্যাত কবি তো আছেনই, কিন্তু লিটল ম্যাগাজিনের ওদিকে, ছোটো ছোটো প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত কবিতার ছোটো ছোটো বই খুঁজে বেড়াতে। আমি তো মহাকাব্য খুঁজি না জীবনে, আটপৌরে সুখেদুখে বাঁধা জীবনের তার সুরে মেলাই বারেবারে। তাই ছোটো কবিতার বই খুঁজি। বইমেলাতেও অসংখ্য মানুষ। কেউ কাউকে চিনি না। তবু সবাইকে যেন বুঝি আমরা সেদিন। সবাই আদতে একটা কি দুটো সুর খুঁজছে। সুখ খুঁজতে এসেছে। এইটুকুই তো দেওয়া নেওয়া। পাঠ্য সুখ।