মানুষটার একটাও সুখ পালকের মত হল না
একটা দুঃখও সাগরের মত হল না।
সে অভিমানী হল তাই।
সব পাখিকে বলত, হুস!
সাগরে নাইতে যাওয়ার কথা হলেই বলত, ধুর!
তার বাড়িতে, বাগানে একটা পালকও ছিল না। তার বিছানায় বালিশে স্নানাগারে এক বিন্দুও ছিল না নোনা জল।
সেদিন জ্যোৎস্না রাত। মানুষটার ঘুম ভেঙে গেল। চারদিক চাঁদের আলোয় যাচ্ছে ভেসে, সে বাড়ির বাইরে এসে দাঁড়ালো। তার মাথা, গা ভাসিয়ে চাঁদের আলো তখন। মানুষটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, সবই অর্থহীন! বিষণ্ণ!
অমনি দেখতে দেখতে তার চারপাশটা সমুদ্র হয়ে উঠল। এত বড় বড় ঢেউ। কি তার গর্জন! দেখতে দেখতে সে মানুষটা পালক হয়ে গেল। সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে, ঢেউয়ের দোলায় দুলতে দুলতে চারদিক তাকিয়ে দেখল, শুধুই জল আর জল। জলের নীচে কত মণিমাণিক্য জ্বলজ্বল করছে। তার লোভ হল না। আনন্দ হল।
এক বিন্দু চাঁদ গলে পড়ল তার বুকের ওপর। পালক বলল, এত সুখ আজ!
অমনি প্রবল বেগে ঝড় উঠল। সমুদ্র হল পাগল হাতির মত। পালক ঢেউয়ের চাপে পিষে যেতে যেতে বলল, এমন প্রলয়কারী দুঃখও আমার ভাগ্যে ছিল!
ঝড় থেমে গেল। সমুদ্র উধাও। ভোরের আলো ফুটছে। পালকটাও মানুষ এখন। সে লাল টকটকে সূর্যের দিকে তাকিয়ে বলল, আমি আলোকিত আজ! তোমার আলো দেখো আজ আমার ভিতর অবধি গিয়ে পৌঁছিয়েছে।
সূর্য প্রসন্ন হেসে বলল, মহৎ দুঃখের অধিকারী হও...
মানুষটা বলল, আমি পালক চাঁদ আর সাগরের গল্প জানি। সব অর্থশূন্য, আনন্দ!
সৌরভ ভট্টাচার্য
24 December 2019