সৌরভ ভট্টাচার্য
14 July 2014
"যারা আসবে তোমার কাছে তারা সমকামী"
ফোনে এটাই ছিল আন-অফিসিয়াল ফুটনোট।
তারা আসবে তাদের রিসার্চের বিষয়ে কথা বলতে।
তবু কিরকম অস্বস্তি। মন দ্বিধান্বিত - আসতে বলব?
বললাম আসতে।
ওরা আসল। বিশের কোঠায় পা।
স্বাভাবিক সুদর্শন দুই পুরুষ
তবু ওরা অন্যরকম।
সন্দিগ্ধতায় দেখছি ওদের কিছুটা কৌতুহলে আর উপেক্ষায়।
ওরা বসল। আমি ঘরের পর্দা টানলাম।
কেন জানি না। বুক চাপা বেমানান অনুভুতি।
হাজার হোক ওরা তো আর স্বাভাবিক না।
ওরা কথা শুরু করল।
আমি অভ্যস্ত উত্তরগুলো ওদের সামনে রাখতে রাখতে, ওদের আচরণ, কথায় অস্বাভাবিকতা খুঁজতে লাগলাম।
বিছানায় বসল, চাদর কুঁচকাল,
আমি বসলেও যেমন হয়।
সরবতের গ্লাস ধরল, গ্লাসে ঘামের দাগ পড়েই সাথে সাথে গেল মিলিয়ে,
আমার গ্লাসেও যেমন হয়।
দুজনে তাদের প্রশ্ন, তর্ক, সহমত- সব পাশাপাশি রাখছে গুছিয়ে,
কেউ কাউকে অতিক্রম করছে না।
মেধাবী ছাত্র হলে যেমন হয়।
আমার দ্বিধান্বিত মনে চলছে তুমুল আলোড়ন।
কোথায় আলাদা ওরা?
আলোচনা শেষ।
আমার অস্থির মনের নির্লজ্জ প্রশ্ন মুখ ছিটকে এল বেরিয়ে, থুতুর মত-"অসুবিধা হয় না, এভাবে বাঁচতে, থাকতে?"
"তা হয়। তবে নিজেদের বোঝাবুঝিটা স্পষ্ট থাকলে, বাইরেটা বড় সমস্যা নয়।"
চমকে উঠলাম, এত সোজা উত্তর!
ভাবিনি এত স্পষ্ট ওরা নিজেদের চিন্তায়, নিজেদের কাছে।
ভেবেছিলাম আমার নির্ভুল, নৈতিক প্রশ্নে ওরা দুমড়ে মুচড়ে চুরচুর হয়ে যাবে আমার সামনে,
লজ্জায় কুঁকড়ে যাবে ওদের বুক, আর লজ্জিত গলায় বলবে,"খুব",
আমার নৈতিক মন হবে গর্বিত।
ভেবেছিলাম চেয়ারে গা এলিয়ে ওদের অস্বাভাবিক, না- সামাজিক বিকৃতিকে বিঁধব আমার প্রশ্নবাণে।
হল না।
আমি বিস্মিত হলাম। মনে ভাবলাম- স্পর্ধা!
ওরা বলে চলল নিজেদের খুঁজে পাওয়ার গল্প। আমি অবাক হতে থাকলাম ওদের স্বচ্ছতায়।
যত শুনলাম তত ছোট হয়ে আসল আমার বুক। আমার সামনে রাখা আয়নায় আমার ছায়া পড়ছিল।
উঠে অন্য চেয়ারে বসলাম।
আমার খুব লজ্জা করছে।
আমার সামনে দুজন সাধারণ মানুষ। সবার মত আশা, আকাঙ্খা, আশঙ্কায় ভরা বুক।
আর সব ছাপিয়ে ভালবাসা।
শুধু ভালবাসার চেনা ছকটা নেই।
হার মানলাম ওদের নিজেদের বিশ্বাসের কাছে নিজেদের দায়বদ্ধতা দেখে।
মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না ওদের পারস্পরিক বোঝাপড়াতে।
সমকামী না, সমপ্রেমী।
উঠে পর্দা সরিয়ে দিলাম।
আলো পড়ল ওদের মুখে
আমার মনে।
বললাম দুপুরে যেও খেয়ে।
প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে যে।
ফোনে এটাই ছিল আন-অফিসিয়াল ফুটনোট।
তারা আসবে তাদের রিসার্চের বিষয়ে কথা বলতে।
তবু কিরকম অস্বস্তি। মন দ্বিধান্বিত - আসতে বলব?
বললাম আসতে।
ওরা আসল। বিশের কোঠায় পা।
স্বাভাবিক সুদর্শন দুই পুরুষ
তবু ওরা অন্যরকম।
সন্দিগ্ধতায় দেখছি ওদের কিছুটা কৌতুহলে আর উপেক্ষায়।
ওরা বসল। আমি ঘরের পর্দা টানলাম।
কেন জানি না। বুক চাপা বেমানান অনুভুতি।
হাজার হোক ওরা তো আর স্বাভাবিক না।
ওরা কথা শুরু করল।
আমি অভ্যস্ত উত্তরগুলো ওদের সামনে রাখতে রাখতে, ওদের আচরণ, কথায় অস্বাভাবিকতা খুঁজতে লাগলাম।
বিছানায় বসল, চাদর কুঁচকাল,
আমি বসলেও যেমন হয়।
সরবতের গ্লাস ধরল, গ্লাসে ঘামের দাগ পড়েই সাথে সাথে গেল মিলিয়ে,
আমার গ্লাসেও যেমন হয়।
দুজনে তাদের প্রশ্ন, তর্ক, সহমত- সব পাশাপাশি রাখছে গুছিয়ে,
কেউ কাউকে অতিক্রম করছে না।
মেধাবী ছাত্র হলে যেমন হয়।
আমার দ্বিধান্বিত মনে চলছে তুমুল আলোড়ন।
কোথায় আলাদা ওরা?
আলোচনা শেষ।
আমার অস্থির মনের নির্লজ্জ প্রশ্ন মুখ ছিটকে এল বেরিয়ে, থুতুর মত-"অসুবিধা হয় না, এভাবে বাঁচতে, থাকতে?"
"তা হয়। তবে নিজেদের বোঝাবুঝিটা স্পষ্ট থাকলে, বাইরেটা বড় সমস্যা নয়।"
চমকে উঠলাম, এত সোজা উত্তর!
ভাবিনি এত স্পষ্ট ওরা নিজেদের চিন্তায়, নিজেদের কাছে।
ভেবেছিলাম আমার নির্ভুল, নৈতিক প্রশ্নে ওরা দুমড়ে মুচড়ে চুরচুর হয়ে যাবে আমার সামনে,
লজ্জায় কুঁকড়ে যাবে ওদের বুক, আর লজ্জিত গলায় বলবে,"খুব",
আমার নৈতিক মন হবে গর্বিত।
ভেবেছিলাম চেয়ারে গা এলিয়ে ওদের অস্বাভাবিক, না- সামাজিক বিকৃতিকে বিঁধব আমার প্রশ্নবাণে।
হল না।
আমি বিস্মিত হলাম। মনে ভাবলাম- স্পর্ধা!
ওরা বলে চলল নিজেদের খুঁজে পাওয়ার গল্প। আমি অবাক হতে থাকলাম ওদের স্বচ্ছতায়।
যত শুনলাম তত ছোট হয়ে আসল আমার বুক। আমার সামনে রাখা আয়নায় আমার ছায়া পড়ছিল।
উঠে অন্য চেয়ারে বসলাম।
আমার খুব লজ্জা করছে।
আমার সামনে দুজন সাধারণ মানুষ। সবার মত আশা, আকাঙ্খা, আশঙ্কায় ভরা বুক।
আর সব ছাপিয়ে ভালবাসা।
শুধু ভালবাসার চেনা ছকটা নেই।
হার মানলাম ওদের নিজেদের বিশ্বাসের কাছে নিজেদের দায়বদ্ধতা দেখে।
মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না ওদের পারস্পরিক বোঝাপড়াতে।
সমকামী না, সমপ্রেমী।
উঠে পর্দা সরিয়ে দিলাম।
আলো পড়ল ওদের মুখে
আমার মনে।
বললাম দুপুরে যেও খেয়ে।
প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে যে।