Skip to main content
 
অমল জানলা বন্ধ করে শুয়ে আছে। সুধা পাগল হয়ে নিরুদ্দেশ। ফকির মাথা ফেটে কোনো হাসপাতালে ভর্তি, শোনা গেছে তার স্মৃতিভ্রংশ হয়েছে। রাজার চিঠি পুড়িয়ে দিয়েছে কারা। রাজা নাকি বন্দী, কেউ জানে না কোথায়। অন্ধ ভিখারি, গোয়ালাদের আর রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না বহুদিন। সারা পাড়া নিস্তব্ধ।
       একটা মৃত পাখি সোনার খাঁচায় পড়ে আছে রাস্তার ধারে। তার পেটে কাগজের খসখস আওয়াজ। সেই সোনার খাঁচা তুলে নন্দিনী হাঁটছে অন্ধকারে; পাহাড়ি রাস্তায় একা। বিশু পাগল গান ভুলেছে, সে নাকি মেহের আলী-র পাশে বসে চীৎকার করে উঠছে মাঝে মাঝেই - সব ঝুট হ্যায়... সব ঝুট হ্যায়.....
       ইট এসেছে। মহাপঞ্চক, পঞ্চক --- সবাই মিলে তদারকি করছে, নতুন করে গড়ে তোলা হবে অচলায়তন। একজটা দেবীর সোনার আসনের জন্য মোহর আনা হয়েছে বিদেশ থেকে।
       পূজারিনির রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে বেদীতলে। সুরঙ্গমা বাকরুদ্ধ। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বসে উত্তরায়নের দিকে।
       সবাই তাকিয়ে বসে। তাদের পাশে বসে কিছু তরুণ-তরুণী, ওরা হেঁটেছিল, রক্তাক্ত শরীরে রাস্তায় শুয়েছিল, সেদিন ছিল একুশে ফেব্রুয়ারী।
       "ওই মহামানব আসে"... কে গাইছে? মহামানব কি একলা শরীর?
       অর্জুনের সারথী গেয়ে উঠছে....
 
সর্বত পানিপাদং তত সর্বত অক্ষিশিরোমুখম
 
সর্বত শ্রুতিমানলোকে সর্বম আবৃত তিষ্ঠতি..
 
সর্বত্র তাঁর হস্ত-পদ-চক্ষু-কর্ণ
 
    সবাইকে নিয়েই সেই সত্তা...
       সেই মহামানব.... সে জেগে উঠেছে... যখন সহস্র পা, সহস্র কণ্ঠ, সহস্র চোখ, সহস্র শ্রবণ রাস্তায় নামে... তখন সেই মহামানবের রথ রাস্তায় নামে... তার জ্যোতির সামনে কোনো মুখোশ টিকতে পারেনি আজ অবধি.... তার গতির সামনে কোনো অচলায়তন টেকেনি... সে জেগেছে... সে জাগছে....
       "তোরা শুনিস নি কি, শুনিস নি তার পায়ের ধ্বনি"