সেদিন সকালে ঝুল বারান্দায় বসে আছি। মনটা পদের না। কেন পদের না, বুঝছি না, বোঝার চেষ্টাও করছি না। পাত্তা দিলে পেয়ে বসে। খুব আদুরে বেড়ালের মত মন এক্কেবারে পছন্দ না আমার। সে যা হোক সামনের বাড়ির বাঁধানো উঠানে কটা ঝরা পাতা এলোমেলো বাতাসে উড়ছে, দেখছি, বেশ লাগছে।
খানিক পর। একজন বালতি আর ন্যাতা নিয়ে এলো। ঝাঁ ঝাঁ করে পুরো উঠান মুছে দিয়ে চলে গেল। দেখলাম, ভিজে উঠানে আশেপাশের গাছপালা, ফুলের প্রতিচ্ছবি পড়ে কেমন উঠানের মুখটাই বদলে দিল। যে উঠান উদাস হয়ে একা কটা ঝরা পাতা নিয়ে পড়েছিল, সেই ভিজে যেতেই সব কিছুর প্রতিচ্ছবি বুকে নিয়ে উৎফুল্ল হয়ে উঠল।
নিজের মনের দিকে আড়চোখে তাকালাম। বুঝেছে মনে হল। ভালোবাসাতে মন না ভিজলে, শুকিয়ে থাকলে, কটা ঝরা পাতার মত কিছু মন খারাপ করা পুরনো কথা ছাড়া কিছুই ভাগ্যে জুটবে না যে!
বুদ্ধি বলল, ওহে ভাবুকের দল, ওঠো এবার, বিস্তর কাজ জমে যে। উঠছিলামই, হঠাৎ একটা দোয়েলের শিস কানে এল। কর্তব্য বুদ্ধি, ধূপের ধোঁয়ার মত মিলিয়ে গেল, কর্তব্যের গন্ধটাও গেল খানিক পরে। কে যেন খুব ক্ষীণস্বরে কানের কাছে এসে বলল, একেই বলে ছুটি, যা ফাঁকি দিয়ে মেলে। ধরাবাঁধা ছুটি আবার ছুটি নাকি? সে তো শিকলের অলঙ্করণের ফাঁক, শিকলকে ফাঁকি দেওয়া তো নয়! শিকলকে ফাঁকি দেওয়াই হল ছুটি, বুঝলে!
হে হে বোঝার আবার কিছু বাকি আছে নাকি?
সৌরভ ভট্টাচার্য
22 August 2015