সৌরভ ভট্টাচার্য
7 January 2020
হঠাৎ গুরু বললেন, কাল থেকে বৃক্ষ শ্বাসবায়ু দেবে না, জল তৃষ্ণা নিবারণ করবে না, অগ্নি খাদ্যপাক করবে না, খাদ্য ক্ষুধা নিবৃত্তি করবে না। একে বলা হবে অবরুদ্ধ তপস্যা।
গ্রামে সবাই চিন্তিত, উদ্বিগ্ন, উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়ল। আশ্রমের সামনে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। হঠাৎ কেন এমন আদেশ?
গুরুর সেবায়ত ঘোষণা করলেন, গুরু যজ্ঞে বসেছেন, কাল যজ্ঞ সমাপন হলেই সেই যজ্ঞভস্ম বাতাসে উড়ে উড়ে গিয়ে গুরুর নির্দেশ পালন করবে, শুরু হয়ে যাবে অবরুদ্ধ তপস্যা। যারা যারা দীক্ষা নিয়েছেন তারা প্রমাণপত্র জোগাড় করুন, যারা নেননি ফর্ম ফিলাপের আবেদন করুন। তার আবেদনের জন্য লাগবে মায়ের নাভির ছিন্নাংশ, পিতার পিতার শেষ অমাবস্যায় স্নানের জলের নমুনা বিশেষ।
হইচই উৎকণ্ঠা আরো বেড়ে গেল। ওদিকে আশ্রমে গুরুর আসনের পাশে বসে থাকা প্রধান চেলা বললেন, বাবা এ সব করবেন কি করে? একি আপনার দ্বারা সম্ভব...এই জল বাতাস অগ্নি ইত্যাদির কাজ বন্ধ করা?
গুরুদেব হেসে বললেন, বাছা রে আমার, মানুষের যা সহজ অধিকার, তাকে আয়াসসাধ্য করে তুললে সে উদ্বিগ্ন হয়, বিভ্রান্ত হয়, অস্থির হয়ে ওঠে। তখন সে আরো দুর্বল, ত্রস্ত। দুর্বল আপনিই বাধ্য হয় দুর্বল প্রাণের পীড়াপীড়িতেই। বেগ পেতে হয় না। সে পদ্ধতি শুরু হলেই যজ্ঞভস্মর আখ্যান বদলে দিলেই হল। সে আর কতক্ষণ? যাও যাও, তোমরা ইতিমধ্যে প্রচারে যাও।