Skip to main content

ও খেতে ইচ্ছা হলে আপনিই খাবে...

কিন্তু আমরণ আর খাবার ইচ্ছা হয়নি
আমরণ! 
   হায়,
      আর বাকি তো মাত্র পাঁচটা বছর
  সে বছরও তো বাঁচার না
      ভোগার বছর
        কিছু হাস্পাতালে
           আর কিছু নিজের ঘরে
             শোয়ার ঘরে 

শোয়ার ঘর। ঠাকুর ঘর। ছাদ। রান্নাঘর। বারান্দা। বাথরুম। 
তেত্রিশ বছরের মানচিত্র।

ক্রমশ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। ইচ্ছাগুলো ঝুলকালি মাখা। 
বাসনাগুলো ভাঙা বাসনের মত ফুটিফাটা,
   এদিকে তাকালে ওপারের খোলা আকাশ
যে আকাশের নীচে বসে লক্ষ্মী-নারায়ণ

দোলপূর্ণিমার নিশি নির্মল আকাশ
মন্দ মন্দ বহিতেছে মলয় বাতাস
লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসে নারায়ণ
কহিতেছে কত কথা সুখে আলাপন...

   চারমিনারের ধোঁয়ার গন্ধ... সুখে আলাপন...
অথচ মানুষটা গেলবারের নববর্ষে 
    তার নিজের হাতে কেনা 
        তার নিজের হাতে সেলাই করা
          সবুজ লুঙ্গিটা পরে
            খালি গায়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরের ঘরে 
              উঠতে উঠতে কি অনায়াসে বলে গেল...
“ও খিদে পেলেই খাবে...”

কি উদাসীন
কি নিষ্ঠুর
যেন সত্যিই মহাপুরুষ! 

সূর্যের আলোর তেজ কমে আসছে
 জ্যোৎস্না যেন মন খারাপের সখী 
   বৃষ্টিভেজা নারকেলগাছটায় বসা 
     ভিজে কাক
      পাশের বাড়ির তারে মেলা শুকনো কাপড়ের
          আবার ভিজে যাওয়া

ও বাড়ির বৌদি... এমনই ভুলো... 
সে থাকবে না যখন
   এমনই বর্ষা শেষে ভিজে কাক বসবে
       ভিজে নারকেল গাছের মাথায়
         এমনি শুকনো কাপড় আবার ভিজবে
            নতুন বর্ষায়... 
              এই খাটে সে-ই আর শুধু থাকবে না...

“খিদে পেলেই খাবে...” 

শব্দগুলো গিলতেই পারল না...
  এমনকি যখন তার পেট ভর্তি জল
     পা দুটো ফোলা ফোলা
        যখন মাথা ভর্তি সৌভাগ্যের সিঁদুর
           তখনও ভুলতে পারল না...
এদিকে সংসার তখন এক চুল্লী আগুন জ্বালিয়ে
    তার এয়ো হয়ে স্বর্গে যাওয়ার সৌভাগ্যের অভ্যর্থনায়...

ওদিকে জ্বলন্ত চার্মিনার...
        যে কালো ঠোঁটে চুমু ছিল না কোনোদিন...
   পৌরুষের অহংকারে মায়া জন্মালো আজ প্রথম
      যখন তার সারা শরীর জুড়ে ঘি মাখানো হচ্ছে
   পৌরুষের পাঁচিলের ভালোবাসা অবাঞ্ছিত আগাছা...
      কাম উড়ে এসে বসে মাঝে মাঝে চিলের মত...
কিন্তু চিল নিয়ে কি সংসার করা যায়!

তবু করল সে...
  এইবার যখন তার একদম নাভি আর ছাই হয়ে জন্মানোর সময়
তখনও তার কানে আরেকবার বাজল...
“ও খিদে পেলেই খাবে”...

তবু একবার জিজ্ঞাসা করল না সে

“তোমার কিসের অসুবিধা, হ্যাঁ গো.... 
       খাচ্ছ না কেন ভালো করে”...

চুল্লীর ধোঁয়া তখন অল্প অল্প মিশে যাচ্ছে আকাশে
   যেখানে কিছুটা উঠলে চিল
       আরেকটু উঠলে ভগবান...
অথচ সংসার করতে যে দু'জনেই বাড়তি...
    লাগে বলতে তো 
       একটু মাটি, আগুন আর জল...

সেই এমন মাগ্যি!

Category