নৃপেনবাবু আর অঘোরবাবু, দুজনেই পঞ্চাশ পেরিয়েছেন। দুজনেই চায়ের দোকানে বসে।
নৃপেনবাবু না পাহাড়ে গেছেন, না জঙ্গলে, না সমুদ্রে। তাও আজীবন বেজায় খুশীতে কাটিয়ে দিলেন। কিন্তু অঘোরবাবুর মনে দুঃখ আর যায় না। একদিন সারা ভারতের আনাচে কানাচে ঘোরা অঘোরবাবু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কোথাও না গিয়ে এত্ত মজাসে থাকেন কি করে?
নৃপেনবাবু বললেন, দেখো, তুমি পাহাড়ে, নদীতে, জঙ্গলে, সমুদ্রে ঘুরে বেড়াও কেন? সেখানে গেলে ওদের ভালো লাগে, না তোমার ভালো লাগে?
অঘোরবাবু বললেন, অবশ্যই আমার ভালো লাগে।
নৃপেনবাবু বললেন, নিজেকে ছোটো লাগে? কি অপমানিত লাগে? কি কনফিউজড লাগে?
আহা, এগুলো লাগলে কি আর ভালো লাগত? অঘোরবাবু চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন।
নৃপেনবাবু বললেন, আমি ঠিক এই কাজটাই করি, যে মানুষের কাছে গেলে নিজেকে ছোটো লাগে, অপমানিত লাগে, কনফিউজড লাগে... আমি যাই না। জাস্ট এড়িয়ে যাই। ব্যস! সোজা হিসাব।
নৃপেনবাবু চলে যাচ্ছেন।অঘোরবাবু চিন্তিত মুখে বসে। হঠাৎ উঠে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তাও যদি তাদের থেকে দূরে না থাকা যায়?
নৃপেনবাবু বললেন, তবে প্রথমে সোজাসাপটা বলে দেবেন, মশায় বুঝে চলুন। না শুনলে নিজের দাঁড়াবার জায়গাটা পাল্টান। তাও না হলে নিজেকে পাল্টান। তাও না হলে পালান। সোজা হিসাব!