সৌরভ ভট্টাচার্য
30 March 2019
তিনটে নামেই প্রথমে চমক লাগবে। নীৎজে আর কামু না হয় বুঝলাম। কিন্তু বাপু, এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঢুকলেন কি করে? না তো এদের দু’জনের সঙ্গে দর্শনে মিল, না তো জীবনচর্যায়। তবে কোন যুক্তিতে এই তিনটে নাম একসাথে উচ্চারিত হয়?
খাঁটি কথা। কামু'র মধ্যে নীৎজের প্রভাব আছে সর্বজনবিদিত। তা বলে রবীন্দ্রনাথ? সময়কালটা একটু দেখে নেওয়া যাক। নীৎজের জন্মসাল ১৮৪৪, রবীন্দ্রনাথ ১৮৬১, অ্যালবার্ট কামু ১৯১৩ (অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের নোবেল পাওয়ার বছর) – প্রথমজন জার্মানে, দ্বিতীয়জন অবিভক্ত ভারতে, তৃতীয়জন ফরাসী দেশে। তবু কোন এক ক্ষণে এদের তিনজনের কক্ষপথ কোন এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছিল। অবশ্যই চিন্তার কক্ষপথ।
প্রথমে আলোচনায় আসা যাক নীৎজে ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভাল আমি যে রবীন্দ্রনাথের কথা বলছি সে রবীন্দ্রনাথ শুধুই দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ। নীৎজে তার জীবনের অনেকটা সময়, বিশেষত শেষের দিকে ও প্রথম দিকে কাটান চুড়ান্ত মানসিক বিপর্যয়ে। তবে বিপর্যয় শব্দটা ১৮৮৮ থেকে শুরু করে ওনার মৃত্যু (১৯০০ খ্রীষ্টাব্দ) অবধি চুড়ান্ত চলে। মধ্যবয়সে মনের মধ্যে চুড়ান্ত সংঘর্ষ ও সংঘাত দেখা দিয়েছিল ওনার, তার থেকে তিনি এক দার্শনিক তত্ত্বে উপনীত হন, যা কিছুদিনের জন্য তার মনকে প্রবোধ দিয়েছিল। সে দার্শনিক তত্ত্ব ওনার জীবনে উপলব্ধ হয় যখন ওনার বয়স প্রায় চল্লিশের কাছাকাছি। কী সেই দার্শনিক তত্ত্ব? তার নাম উনি দিলেন --- AMOR FATI, বাংলায় কি বলব? ভাগ্যের সাথে সখ্যতা? ওনার অর্থানুরূপ বলতে গেলে --- দুর্ভাগ্যের সঙ্গে সমঝোতা। ওনার লেখা বিখ্যাত বই The Gay (Gay শব্দটির অর্থ এখানে হর্ষ বা প্রফুল্লতা) Science–এ উনি লিখছেন, যার মোটামুটি বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় --- যা কিছু অসুন্দর, যা কিছু যন্ত্রণা, যা কিছু দুঃখ আমি তার বিরুদ্ধে আর লড়াই করব না। তাকে স্বীকার করে নেব। বাধ্য হয়ে না, ভালবেসে। এমন একটা দিন আমার জীবনে আসুক যেদিন ভাগ্যের দিকে, ভাগ্যের যেকোন বিড়ম্বনা, যেকোন পরিহাসের দিকে তাকিয়ে আমি বলতে পারব --- আমি রাজি (YES SAYER)।
আমি থমকে গেলাম। সেই চল্লিশ বছরের কাছাকাছি এসেই জীবনের নানা সংঘাতের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে রবীন্দ্রনাথের উপলব্ধিতে যে কবিতাটা জন্মাচ্ছে সে কবিতার প্রথম লাইন, “মনেরে আজ কহ যে / ভাল মন্দ যাহাই আসুক / সত্যেরে লও সহজে।” আশ্চর্য হলাম, কি সাংঘাতিক মিল! কবিতাটা যদি পুরো পড়া যায়, দেখা যাবে এ তো নীৎজেরই AMOR FATI! নীৎজে, যিনি সোচ্চারে ঘোষণা করছেন, GOD is dead; রবীন্দ্রনাথ, যিনি পরম বিশ্বাসে, আশ্বাসে মৈত্রেয়ী দেবীকে চিঠিতে লিখছেন ‘স্বর্গের কাছাকাছি’তে, তিনি আছেন, তিনি আছেন, তিনি আছেন। দু’জনেই বিশ্বাসের দুই প্রান্ত থেকে, অস্তি ও নাস্তি থেকে দুটো পৃথক কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে একটা বিন্দুতে ক্ষণিকের জন্য মিলে গেলেন, ছুঁয়ে গেলেন।
পাশ্চাত্যের Stoic এবং প্রাচ্যে সাংখ্য ও বেদান্তে এই দর্শনের ইঙ্গিত আছে। অরেলিয়াসের ‘Meditation’, সেনেকা'র ‘পত্রগুচ্ছ’, এপিকটেটাসের ‘উদ্ধৃতাবলী’তে এই দর্শনের ইঙ্গিত বহন করে। সাংখ্য-বেদান্তকে যদি এক জায়গায় গীতার দর্শনের আলোতে দেখি সেখানেও বলা হচ্ছে, ‘সমত্বং যোগা উচ্যতে’ – অর্থাৎ সাম্যের কথা, চিত্তের সমতার কথা। নীৎজে ও রবীন্দ্রনাথ জীবনের চরম সংকটময় মুহুর্ত তাদের উপলব্ধিতে এই দর্শনকে নতুন করে উপলব্ধি করলেন --- একজন দার্শনিকের যুক্তিতে, আর একজন কবিতার ছন্দে।
খাঁটি কথা। কামু'র মধ্যে নীৎজের প্রভাব আছে সর্বজনবিদিত। তা বলে রবীন্দ্রনাথ? সময়কালটা একটু দেখে নেওয়া যাক। নীৎজের জন্মসাল ১৮৪৪, রবীন্দ্রনাথ ১৮৬১, অ্যালবার্ট কামু ১৯১৩ (অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের নোবেল পাওয়ার বছর) – প্রথমজন জার্মানে, দ্বিতীয়জন অবিভক্ত ভারতে, তৃতীয়জন ফরাসী দেশে। তবু কোন এক ক্ষণে এদের তিনজনের কক্ষপথ কোন এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছিল। অবশ্যই চিন্তার কক্ষপথ।
প্রথমে আলোচনায় আসা যাক নীৎজে ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভাল আমি যে রবীন্দ্রনাথের কথা বলছি সে রবীন্দ্রনাথ শুধুই দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ। নীৎজে তার জীবনের অনেকটা সময়, বিশেষত শেষের দিকে ও প্রথম দিকে কাটান চুড়ান্ত মানসিক বিপর্যয়ে। তবে বিপর্যয় শব্দটা ১৮৮৮ থেকে শুরু করে ওনার মৃত্যু (১৯০০ খ্রীষ্টাব্দ) অবধি চুড়ান্ত চলে। মধ্যবয়সে মনের মধ্যে চুড়ান্ত সংঘর্ষ ও সংঘাত দেখা দিয়েছিল ওনার, তার থেকে তিনি এক দার্শনিক তত্ত্বে উপনীত হন, যা কিছুদিনের জন্য তার মনকে প্রবোধ দিয়েছিল। সে দার্শনিক তত্ত্ব ওনার জীবনে উপলব্ধ হয় যখন ওনার বয়স প্রায় চল্লিশের কাছাকাছি। কী সেই দার্শনিক তত্ত্ব? তার নাম উনি দিলেন --- AMOR FATI, বাংলায় কি বলব? ভাগ্যের সাথে সখ্যতা? ওনার অর্থানুরূপ বলতে গেলে --- দুর্ভাগ্যের সঙ্গে সমঝোতা। ওনার লেখা বিখ্যাত বই The Gay (Gay শব্দটির অর্থ এখানে হর্ষ বা প্রফুল্লতা) Science–এ উনি লিখছেন, যার মোটামুটি বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় --- যা কিছু অসুন্দর, যা কিছু যন্ত্রণা, যা কিছু দুঃখ আমি তার বিরুদ্ধে আর লড়াই করব না। তাকে স্বীকার করে নেব। বাধ্য হয়ে না, ভালবেসে। এমন একটা দিন আমার জীবনে আসুক যেদিন ভাগ্যের দিকে, ভাগ্যের যেকোন বিড়ম্বনা, যেকোন পরিহাসের দিকে তাকিয়ে আমি বলতে পারব --- আমি রাজি (YES SAYER)।
আমি থমকে গেলাম। সেই চল্লিশ বছরের কাছাকাছি এসেই জীবনের নানা সংঘাতের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে রবীন্দ্রনাথের উপলব্ধিতে যে কবিতাটা জন্মাচ্ছে সে কবিতার প্রথম লাইন, “মনেরে আজ কহ যে / ভাল মন্দ যাহাই আসুক / সত্যেরে লও সহজে।” আশ্চর্য হলাম, কি সাংঘাতিক মিল! কবিতাটা যদি পুরো পড়া যায়, দেখা যাবে এ তো নীৎজেরই AMOR FATI! নীৎজে, যিনি সোচ্চারে ঘোষণা করছেন, GOD is dead; রবীন্দ্রনাথ, যিনি পরম বিশ্বাসে, আশ্বাসে মৈত্রেয়ী দেবীকে চিঠিতে লিখছেন ‘স্বর্গের কাছাকাছি’তে, তিনি আছেন, তিনি আছেন, তিনি আছেন। দু’জনেই বিশ্বাসের দুই প্রান্ত থেকে, অস্তি ও নাস্তি থেকে দুটো পৃথক কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে একটা বিন্দুতে ক্ষণিকের জন্য মিলে গেলেন, ছুঁয়ে গেলেন।
পাশ্চাত্যের Stoic এবং প্রাচ্যে সাংখ্য ও বেদান্তে এই দর্শনের ইঙ্গিত আছে। অরেলিয়াসের ‘Meditation’, সেনেকা'র ‘পত্রগুচ্ছ’, এপিকটেটাসের ‘উদ্ধৃতাবলী’তে এই দর্শনের ইঙ্গিত বহন করে। সাংখ্য-বেদান্তকে যদি এক জায়গায় গীতার দর্শনের আলোতে দেখি সেখানেও বলা হচ্ছে, ‘সমত্বং যোগা উচ্যতে’ – অর্থাৎ সাম্যের কথা, চিত্তের সমতার কথা। নীৎজে ও রবীন্দ্রনাথ জীবনের চরম সংকটময় মুহুর্ত তাদের উপলব্ধিতে এই দর্শনকে নতুন করে উপলব্ধি করলেন --- একজন দার্শনিকের যুক্তিতে, আর একজন কবিতার ছন্দে।
কামু অবশ্যই এদের কিছুটা পরে। তিনি যখন The Outsider প্রকাশ করতে চলেছেন, প্রকাশককে বলছেন, অপেক্ষা করো। এই Outsider–কে বোঝাতে আমার একটি দার্শনিক প্রবন্ধও আসছে – The myth of Sisyphus. যেখানে তিনি ব্যাখ্যা করতে চলেছেন, Absurdity. সেই গ্রন্থে তিনি বলছেন, “অস্তিত্ব ছলনাময়ী এবং তা শাশ্বত।”
রবীন্দ্রনাথে আসি। রবীন্দ্রনাথের অন্তিম শয্যায় লেখা কিছু কবিতা যেন ওনার জীবনের সমস্ত উপলব্ধিগুলিকে কোথাও একটা উপসংহারে টানার প্রয়াস। আমি সঞ্চয়িতা’র চারটি কবিতার নাম বলব --- ‘রূপনারানের কূলে’, ‘প্রথম দিনের সূর্য’, ‘দুঃখের আঁধার রাত্রি’ এবং ‘তোমার সৃষ্টির পথ’। শেষ কবিতাটায় আসা যাক ---
রবীন্দ্রনাথে আসি। রবীন্দ্রনাথের অন্তিম শয্যায় লেখা কিছু কবিতা যেন ওনার জীবনের সমস্ত উপলব্ধিগুলিকে কোথাও একটা উপসংহারে টানার প্রয়াস। আমি সঞ্চয়িতা’র চারটি কবিতার নাম বলব --- ‘রূপনারানের কূলে’, ‘প্রথম দিনের সূর্য’, ‘দুঃখের আঁধার রাত্রি’ এবং ‘তোমার সৃষ্টির পথ’। শেষ কবিতাটায় আসা যাক ---
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি
বিচিত্র ছলনাজালে,
হে ছলনাময়ী।
মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে
সরল জীবনে।
এই প্রবঞ্চনা দিয়ে মহত্ত্বেরে করেছ চিহ্নিত;
তার তরে রাখ নি গোপন রাত্রি।
তোমার জ্যোতিষ্ক তা'রে
যে-পথ দেখায়
সে যে তার অন্তরের পথ,
সে যে চিরস্বচ্ছ,
সহজ বিশ্বাসে সে যে
করে তা'রে চিরসমুজ্জল।
বাহিরে কুটিল হোক অন্তরে সে ঋজু,
এই নিয়ে তাহার গৌরব।
লোকে তা'রে বলে বিড়ম্বিত।
সত্যেরে সে পায়
আপন আলোকে ধৌত অন্তরে অন্তরে।
কিছুতে পারে না তা'রে প্রবঞ্চিতে,
শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যে
আপন ভান্ডারে।
অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে
সে পায় তোমার হাতে
শান্তির অক্ষয় অধিকার।
বিচিত্র ছলনাজালে,
হে ছলনাময়ী।
মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে
সরল জীবনে।
এই প্রবঞ্চনা দিয়ে মহত্ত্বেরে করেছ চিহ্নিত;
তার তরে রাখ নি গোপন রাত্রি।
তোমার জ্যোতিষ্ক তা'রে
যে-পথ দেখায়
সে যে তার অন্তরের পথ,
সে যে চিরস্বচ্ছ,
সহজ বিশ্বাসে সে যে
করে তা'রে চিরসমুজ্জল।
বাহিরে কুটিল হোক অন্তরে সে ঋজু,
এই নিয়ে তাহার গৌরব।
লোকে তা'রে বলে বিড়ম্বিত।
সত্যেরে সে পায়
আপন আলোকে ধৌত অন্তরে অন্তরে।
কিছুতে পারে না তা'রে প্রবঞ্চিতে,
শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যে
আপন ভান্ডারে।
অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে
সে পায় তোমার হাতে
শান্তির অক্ষয় অধিকার।
কবিতাটা কি সেই একই অনুভূতির দ্যোতনায় বাজছে না? অস্তিত্ব ছলনাময়ী। এ যেন ভূখন্ডের দুই মহান স্রষ্টার দুই মেরুর চিন্তা এক সমসত্ত্ব সিদ্ধান্তে এসে দাড়াল। এখানেও আস্তিকের দর্শন ও নাস্তিকের দর্শন মিলেমিশে একাকার।
লেখার এবারে একটা উপসংহার টানতে হয়। কিন্তু নীৎজে, রবীন্দ্রনাথ ও কামুর চিন্তার উপসংহার টানার ধৃষ্টতা দেখাব সে হেন মানসিক ভারসাম্যহীন আমি হইনি। আমি শুধু একথাটাই বলে শেষ করতে চাইব, আসলে দর্শনে ‘মিথ্যা’ বলে কিছু হয় না। প্রতিটি মানুষের, সে যত সামান্যই হোক কিম্বা মহীরুহ --- তার নির্দিষ্ট একটি দর্শন থাকবেই, হোক না যতই অস্পষ্ট। আমার মধ্যে হয়তো সত্যের ক্ষীণতম প্রকাশ, আরেকজনের দর্শন হয়তো সত্যতর, কেউ হয়তো সত্যতমে। কিন্তু দর্শনের কোন Superlative Degree হয় না। ‘চুড়ান্ত সত্য’ বলে আদৌ কি কিছু হয়? হয় না। আমাদের উপলব্ধ খন্ডিত সত্যগুলো যে অসীম সত্যের প্রকাশ তা আমাদের বোধের, চিন্তার ও অনুভবের অতীত। তাতেই আমাদের বিস্ময়, সেই বিস্ময়ই আমাদের জীবনের এক-একটা বদ্ধ দরজা খোলার শব্দ।
লেখার এবারে একটা উপসংহার টানতে হয়। কিন্তু নীৎজে, রবীন্দ্রনাথ ও কামুর চিন্তার উপসংহার টানার ধৃষ্টতা দেখাব সে হেন মানসিক ভারসাম্যহীন আমি হইনি। আমি শুধু একথাটাই বলে শেষ করতে চাইব, আসলে দর্শনে ‘মিথ্যা’ বলে কিছু হয় না। প্রতিটি মানুষের, সে যত সামান্যই হোক কিম্বা মহীরুহ --- তার নির্দিষ্ট একটি দর্শন থাকবেই, হোক না যতই অস্পষ্ট। আমার মধ্যে হয়তো সত্যের ক্ষীণতম প্রকাশ, আরেকজনের দর্শন হয়তো সত্যতর, কেউ হয়তো সত্যতমে। কিন্তু দর্শনের কোন Superlative Degree হয় না। ‘চুড়ান্ত সত্য’ বলে আদৌ কি কিছু হয়? হয় না। আমাদের উপলব্ধ খন্ডিত সত্যগুলো যে অসীম সত্যের প্রকাশ তা আমাদের বোধের, চিন্তার ও অনুভবের অতীত। তাতেই আমাদের বিস্ময়, সেই বিস্ময়ই আমাদের জীবনের এক-একটা বদ্ধ দরজা খোলার শব্দ।