Skip to main content

চোখ বন্ধ করলে ভাসছে বয়স্ক মানুষ... কাঁপতে কাঁপতে একটা একটা সিট ধরে ধরে এগোচ্ছেন, টয়লেটের দিকে.... ভীষণ দ্রুতগতি ট্রেনের কামরায় ভারসাম্য রক্ষা করতে করতে.... শরীরের.... আত্মসম্মানের.....

বাচ্চা.... ছুটতে ছুটতে ভুল কুপে ঢুকে পড়েছে.... সবার মুখের দিকে তাকাচ্ছে... পিছনে তার মায়ের গলা.... অন্য ভাষায়.... উদ্বেগের গলা শুনে বোঝা যাচ্ছে তাকেই খুঁজছে.... যে খুদে সামনে....

ওষুধের বাক্স হাতে.... একটা একটা করে ওষুধ বার করে জল দিয়ে গিলছে.... বাড়ির খাবার খাওয়া হয়ে গেছে.... ট্রেনের খাবার সহ্য হয় না.....

আরো অনেক অনেক মানুষ.... টিকিট চেক করে বসে বসে মোবাইলে নিজের বাচ্চাটার ছবি দেখছেন টিটি.... বাড়ি ফিরবেন.... কোলে নেবেন... চুমু খাবেন.....

টয়লেট পরিষ্কার করে যাচ্ছে.... কুপের মধ্যে সুগন্ধী ছড়িয়ে যাচ্ছে..... পা তুলে তাকে ঝাঁট দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে.. করুণায়.... স্বস্তিতে....

খাবারের অর্ডার নিয়ে যাচ্ছে..... খাবার ট্রের পর ট্রে সাজিয়ে নিয়ে যাচ্ছে.... মাঝে মধ্যে গোলমাল হচ্ছে.... চিকেনের জায়গায় ভেজ... ভেজের যায়গায় আণ্ডা.... বচসা হচ্ছে.... ক্ষমা চাচ্ছে... উষ্মা জাগছে.... মিলিয়ে যাচ্ছে.....

আমার কোনো পরিচিত মানুষ নেই.... স্থাপিত ডাকাডাকি সম্পর্ক নেই.... তবু বীভৎসতায় স্থবির হয়ে আছি.... স্বাভাবিক মৃত্যুই সব এলোমেলো করে যায়.... সেখানে এত এত নির্মম মৃত্যু.....

দুর্ঘটনার দায় নেওয়া যায়.... মৃত্যুর জন্যেও দায়ী করা যায় কাউকে না কাউকে.... কিন্তু শোকের? শোকের জন্য কাউকে দায়ী করা যায় না.... যাদের বাড়ি ফেরা হল না.... যাদের এক রাতেই জীবনটা সম্পূর্ণ উলোটপালোট হয়ে গেল..... তাদের জন্য কি থাকে? সান্ত্বনা?

আবার সব ঠিক হবে.... সমষ্টিতে.... কিন্তুর ব্যষ্টিতে কয়েকটা অন্ধকার গহ্বর চিরকাল রয়ে গেল.... কে দায়ী উত্তর পাওয়া হয় তো যাবে... বা যাবে না.... কিন্তু শোকের বোঝা একারই...... নিষ্ঠুরভাবে একা....