সৌরভ ভট্টাচার্য
20 December 2014
তুমি এখনো দাঁড়িয়ে।
ও হ্যাঁ সন্ধ্যে হয়ে গেছে তো!
আমি খেয়াল করিনি।
ওই তো ওরা আসছে।
তোমার সারা মুখে রঙ, তোমার সারা
শরীরে চাহিদা পূরণের প্রতিশ্রুতি।
আমি পরে আসব
কিছু কথা আছে আমার তোমার সাথে।
এখন ওরা আসছে, ভদ্রলোকেরা
ওরা শহুরে সভ্য মানুষের পোশাক খুলে তোমার
ঘরে ঢুকবে।
জঙ্গলে ঢুকে জংলী হবে
তুমি মেলে ধরবে তোমার সব
না সব না, শরীর শুধু শরীর
ওরা জঙ্গলে ঢুকেছে বন্য হবে বলে
ঘর বাঁধবে বলে তো না।
তোমার বাচ্চাকে সামলাচ্ছে তোমারই কোনো
বৃদ্ধা পূর্ববর্তিনী।
তোমার ছেলে পাশের ঘরে,
পড়াশোনা করছে রাতের আলোয়
সভ্য মানুষ হবে বলে।
তোমার সারা শরীরে যখন জন্তুর থাবা, তখন
তোমার চোখে ভাসছে তোমার ছেলের মুখ। কান্না
পাচ্ছে না? কেঁদো না।
দেখো জন্তুটা তোমায় আদর করছে
বিষের মত চুমু, জ্বলন্ত কয়লার মত স্পর্শ।
তোমার মেয়ে আছে?
সে পর্দার ফাঁকে দাঁড়ায়? তোমার অজান্তে সে
তোমার মত সাজে?
তুমি দেখেও না দেখার ভাণ করো
জানোতো নর্দমা কখনো সাগর পায় না।
হৃদয় জাগলেই বাচ্চার মুখে নুন দিয়ে মারার মত
মারো। মরে কি?
আমি সেটাই জানতে চাই জানো, মরে কি?
আমি তোমার পায়ে পড়ি
তুমি অভিশপ্ত করো আমায়, আমার মত আরো আরো
মেরদন্ডহীন মানুষগুলোকে, যারা প্রতিদিন
নাকে রুমাল দিয়ে তোমার পাশ দিয়ে হাঁটি,
আড়চোখে দেখে বলি, ওই দেখ তারা দাঁড়িয়ে,
আমার ভদ্রতার জালের ফাঁকে লোভার্ত চোখ!
জানি জানি সব জানি
কাল তোমার মেয়ে দাঁড়াবে জঙ্গলের দরজায়
ক্ষুধার্ত ইন্দ্রিয়গুলোর জন্যে ক্ষুধার্ত পেট নিয়ে।
আমরা জোড়হাতে দাঁড়িয়ে
আমাদের অভিশাপ দাও!
দাও দাও দাও
বাঁচার একটা সুযোগ করে দিক তোমার অভিশাপ
আমরা বাঁচি তোমার সাথে
তোমার মেয়ের সাথে ফিরুক সমাজের চাকা
সামনের দিকে, আর জঙ্গলে না।