আরে বাবা বলল আর তুই অমনি জঙ্গলে চলে যাবি? একবার ভেবে দেখবি না বাবা কোন দুর্বল মুহুর্তে কাকে কি কথা দিয়ে ফেলেছে, তার জন্য মাথা খারাপ করবি কেন? বলি এমন অন্ধভক্তি কি ভালো? না এমন সাবমিসিভ হওয়া ভালো? তার চাইতে পরিবার নিয়ে না হয় ভেন্ন হতিস, অন্য কোথাও ঘর বাঁধতিস, চাকরি-বাকরি করে ছেলেমেয়ে মানুষ করতিস। তা না, কি এক রাক্ষস খোক্কসের পাল্লায় পড়লি, বউ নিয়ে ঝামেলা বাধালি, বাপটাও অনুশোচনায় কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে প্রাণটা খোয়ালো। ওই জন্যে আমাদের দক্ষিণেশ্বরের পাগলা বামুনটা কি শেখালো? ন্যায্য কথা সব সময় বলতে হয়। তা সে যেই হোক না কেন। হুম্...
এ সব কথা হঠাৎ কেন বলছি? আজকে আবার সুকুমারদার 'লক্ষণের শক্তিশেল' পড়ছিলুম চারটি বাতাসা চিবুতে চিবুতে। মনটা একটা ঘোরে আচ্ছন্ন হয়ে আসছিল, অমনি শুনলাম চারদিকে ঢ্যাঁরারারা.... ঢ্যাঁরারারারারা.... ঢ্যাঁরারারারারারা....
আমি হুড়মুড় করে জেগে উঠে ভাবলাম, তাই তো! কে যেন জঙ্গলে যায়, কে ও, ও কি বোধিবৃক্ষের তলায় বসে ধ্যান করবে, নাকি চিত্রকুটে বাসা বাঁধবে! তখুনি দেখলাম, ওমা! এতো সপরিবারে যাচ্ছে, মানে এ তো নির্বাণের জন্য না, নবনির্মাণের জন্য যাচ্ছে। কিন্তু তা কি হয়? শুরুতেই একটা প্রতিবাদ করা উচিৎ ছিল না?
তবে এসবের মধ্যে যেন কেউ আবার কোনো পুরাণের গপ্পোটপ্পো এনে ফেলবেন না। আমি এমনিতেই নির্বাণ নেব না ভক্ত হব এই সংশয়ে ঘেঁটে আছি। এর মধ্যে কে যেন এসে বলল, ওমা! ও তো হেলেনকেও নিয়ে গেসল, আমাদের দেশে... সেকি যুদ্ধু তারপর মাগো মা... আমি তাকে এক ধমক দিয়ে বললুম, চুপ কর ম্লেচ্ছ মিনসের দল! তোদের দেশে বিশল্যকরণী পাওয়া যায়? অমনি তারা হেঁকে উঠে কিসব ভ্যাক্সিনের কথা বলতে শুরু করল। আর অমনি হঠাৎ করে কারা যেন বলল, চাষী যদি হবে তবে পিৎজা খাবে কেন? ক্রিকেট খেলবে কেন? অমনি পাত্রমিত্র সভাসদাদি সবাই হাউমাউ করে বলে উঠল, ন্যাজ নেই কেন?
সেদিন থেকে কেউ মেরুদণ্ড খুঁজছে, কেউ ন্যাজ... আর আমি? আমি খালি খালি ভাবছি নির্বাণ নেব না অহেতুকী ভক্তি....