Skip to main content

"All happy families are alike; each unhappy family is unhappy in its own way"

        'Anna Karenina' র বিখ্যাত প্রথম লাইন। আমার কথাটা মাথায় এলো 'নীল তিমি' খেলার প্রসঙ্গে। তবে কি নিঃসঙ্গতাই এর কারণ? নিঃসঙ্গতার কারণ অনেক হতে পারে।

  1. বাবা-মায়ের কাছ থেকে সময় কম পাওয়া।
  2. আর যদি সময় পায়ও বা 'quality time' বলতে যা বোঝায় সেটা না পাওয়া।
  3. পড়াশোনার সাথে নিজেকে relate করতে না পারা।
  4. স্কুলের বা প্রাইভেট শিক্ষক / শিক্ষিকার কাছে নিজের প্রয়োজন অথবা অসুবিধাকে বোঝাতে না পারা।
  5. ঠিকঠাক বন্ধু না পাওয়া।
  6. স্বভাবজাত communication skill এর সমস্যা।
  7. বাড়িতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। বেশিরভাগই বাবা মায়ের মধ্যে সমস্যা।
  8. কিশোর / কিশোরী বয়সে প্রেমঘটিত ব্যর্থতা।
  9. মেধার সাথে বিষয়ের অসামঞ্জস্যতা, ফলস্বরূপ হীনমন্যতা। এই হীনমন্যতা নিজেই একটা বিরাট সমস্যা।

নিঃসঙ্গতা ছাড়া আরো কিছু কারণ হতে পারে।

  1. কৌতুহল
  2. অ্যাডভেঞ্চারের ইচ্ছা
  3. বন্ধু বান্ধবদের emotional force
  4. কিছু একটা achievement -এর উচ্চাকাঙ্ক্ষা।

        নিঃসঙ্গতা বাদে বাকি কারণগুলোর ক্ষেত্রে কাউনসেলিং কাজে দিতে পারে, কিন্তু নিঃসঙ্গতার ক্ষেত্রে বিষয়টা আরো গভীর। আমার কথাটা বলতে খুব খারাপ লাগলেও তবু বলতে হচ্ছে, ছেলেমেয়েকে বড় করা আর পোষ্যকে(pet) কে লালন করার মধ্যে একটা বিস্তর পার্থক্য আছে। বহু পরিবারে সে পার্থক্যটা যেন কোথাও লোপ পেতে চলেছে দেখছি। আদর, স্নেহ, শাসন - সবই যেন মাত্রাছাড়া। বিবেচনাহীন।

        মানুষের একটা ক্ষমতা আছে, সহানুভূতিসহ পর্যবেক্ষণ বা নিরীক্ষণ। এ দায়িত্ব শুধু যে বাবা-মা তে বর্তায় তা নয় তো, এ দায়িত্ব প্রতিটা শিক্ষক শিক্ষিকার। যে ছেলেটা বা মেয়েটা আমার সামনে পড়তে বসছে, সে একটা সম্পূর্ণ মানুষ, আগামী সমাজের একটা স্তম্ভ। তাকে সূর্যের আলো কিভাবে ক্লোরোফিলকে উত্তেজিত করে সেটা বোঝাবার আগে প্রাথমিক দায়িত্ব সে বোঝার মত অবস্থায় আছে কি না বুঝতে চেষ্টা করা। সমস্যা বুঝলে, ক্লাসে না হোক, পরে তাকে ডেকে তার সাথে কথা বলতে চেষ্টা করা। কারণ ওই যে বললাম, সে একটা সম্পূর্ণ মানুষ। আমি তার বেশ খানিকটা বাদ দিয়ে শুধু তার মনোযোগটা ক্লাসে চাইব, আর না দিলেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করব বা উদাসীন থাকব- এতে আর যা হোক, শিক্ষাটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়, শিক্ষক আর ছাত্র দুজনেরই। দায়টা সহানুভূতির সাথে নিলে বিরক্তির পর্যায়ে পৌঁছায় না। আমার বিশ্বাস, এই মানসিকতার শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা খুব একটা কম হয়ে যায়নি এখনও। যদিও বিপরীত উদাহরণও আছে।
        আসল কথাটাই হল - সহানুভূতিশীল হওয়া। প্রশ্রয় আর সহানুভূতির মধ্যে পার্থক্য করতে অসুবিধা হয় অনেকের দেখেছি। তার কোনো বিধিবদ্ধ নিয়মও নেই। মাঝে মাঝে ভুল করতে দেওয়ার অথবা ভুলটাকে খাটো করে দেখায় আদতে লাভ প্রচুর হয়, যদি না সেটা দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ হয়। প্রশ্রয়ের সাথে প্রশ্রয়দাতার একটা দুর্বলতার যোগ থাকে, কিন্তু সহানুভূতির সাথে সেটা থাকে না। সে প্রয়োজনে বাইরে নির্মমতার কঠোর অভিনয়ও করতে পারে, কিন্তু নিজেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে দেয় না।
         কিন্তু এসবই তো তাত্ত্বিক কথা। তবু এর অনুশীলন ব্যতীত কোনো পথও তো চোখে পড়ছে না। এর সাথে আরেকটা ভয় হচ্ছে মাঝেমধ্যে। এই গেমটার এত প্রচার আবার backfire না করে বসে। যে সব ছাত্রছাত্রীরা এই গেমের দৌলতে খবরের কাগজের পাতায় উঠে আসছে সেই ঘটনাটাকে সেই বয়েসী ছেলেমেয়েরা কি চোখে দেখছে? এই বয়সে ভেবেচিন্তে কাজ করতে তো শেখায় না। আবেগ, উত্তেজনা, উন্মত্ততা অনেক হঠকারি পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে দিতে পারে তাদের। এটাও ভাবা দরকার। সতর্ক থাকার দরকার বলে আমার মনে হয়। কি ভাবে নিচ্ছে তারা এই খবরগুলো। 'কাল আমারও নাম উঠবে'... এই নেশা বা আকর্ষণ তৈরি হচ্ছে না তো!