সৌরভ ভট্টাচার্য
2 January 2020
শঙ্করাচার্যের 'মণিরত্ন-মালা' বিখ্যাত বই। সেই বইয়ের একটি রত্ন।
শিষ্য জিজ্ঞাসা করছে - একমাত্র নরকের দ্বার কি?
গুরু উত্তর দিচ্ছেন - নারী।
গুরু উত্তর দিচ্ছেন - নারী।
পরের প্রশ্ন।
শিষ্য জিজ্ঞাসা করছেন - প্রাণীগণের স্বর্গপ্রদ কি?
গুরু উত্তর করছেন - অহিংসা।
গুরু উত্তর করছেন - অহিংসা।
(শ্লোক সংখ্যা ৩ থেকে উদ্ধৃত)
এখন কথা হচ্ছে অতশত বছর আগে এমন একটা কথা বলেছে, সেই সমাজব্যবস্থায় না হয় অমন একটা কথার চল ছিল। আচ্ছা তাই বা বলি কি করে, এখনের গুরুদের বইতেও যে খুব উচ্চকোটির নিয়ে উপদেশাবলি আছে নারীদের নিয়ে তাও তো নয়। কিন্তু সে কথা থাক। অত লক্ষ লক্ষ মহিলাভক্তকূলের যদি সে উপদেশে কিছু আসে না যায় মরতে আমার আর কি বলার থাকতে পারে।
কিন্তু আমার প্রশ্নটা হল, নারী নরকের দ্বার এমন যার অনুভব সে-ই পরের শ্লোকেই 'অহিংসা'র কথা কেমন করে অনুভব করছে? নারী যদি মনুষ্যপদবাচ্য হয়ে থাকে তবে তার প্রতি এমন ধারা একটা মনোভাব কি খুব অহিংসার পরিচয়? কাউকে অসম্মান করা কি তাকে হিংসা করা নয়? নাকি শুধু রক্তারক্তি আর হত্যালীলাতেই হিংসা হয়? কারোর আত্মসম্মানবোধে, মানবিক মানে আঘাত করা বুঝি হিংসা নয়? কেউ হয়ত বলবেন, সে সুক্ষ্ম বিচারে। তা হ্যাঁ গা, সেই সুক্ষ্ম বিচারে যদি জগতের মূলে কোন ইন্দ্রিয়াতীত ব্রহ্মের অস্তিত্ব পর্যন্ত নাকি টের পাওয়া গেল, সেই সুক্ষ্ম বিচারে একজন মানু্ষের আত্মসম্মানবোধটুকুকে ধরা গেল না? এ কেমন ধরণের সুক্ষ্মদৃষ্টি বাবা!
এ সব কথা কেন বলছি হঠাৎ। আসলে যেভাবে দিনে দিনে গুরু-অবতার-মুনি-বাবাজী-মাতাজীর বাড়বাড়ন্ত দেখছি, তাদের সবারই তো রেফারেন্স বই এইগুলানই কিনা, তাই জিজ্ঞাসা করা। নইলে কবে কে কি বলেছিল দিয়ে আমার আর ভাবনার কি ছিল? কিন্তু সেই "নিশ্চিন্ত আর থাকতে দিল না রে তোপসে".. দেখি সদগুরু আবার কি বলেন, আজকাল তো উনিই সবচাইতে বেশি দেখেন, বোঝেন, না পড়েই অবশ্যি...মায় উনি অবধি ওনাকে গুরু মানেন...আমি তো কোন ছার...