প্রভু বসি রাজসিংহাসনে
ভক্ত প্রবেশিল
হস্তে তার সহস্র ছিন্ন মস্তক, রুধি সিক্ত অসি
দিল প্রভু পায়ে
প্রভু শিহরিয়া উঠি জিজ্ঞাসিলেন, কি এ?!
ভক্ত কহে জুড়ি দুই কর,
এ সকল নাস্তিকের শির প্রভু
অন্ধকারে মদ মত্ত, প্রচারি ফিরিতেছিল, তুমি নাই!
স্পর্ধা প্রভু!
কহ তুমি, কেমনে সহিব এই ঘোর নাস্তিকতা!
ভক্ত প্রাণে মোর উঠিল বিষ জ্বালা
করিলাম মুন্ডচ্ছেদ, যতেক পাষন্ডের
এ সবারে নরকে পাঠাও এবে স্বামী
নিদারুণ সকরুণ যন্ত্রণা উঠিল ফুটি
প্রভুর নয়নে
আরক্ত নয়নে চাহি, কহেন ভক্তরে
রে মূঢ়! কি করিলি ভকতি মোহেতে!
না প্রকাশে মোর জ্যোতি সব হৃদাকাশে
জানি তাহা, তাহাতে নাহিকো মোর ক্ষোভ
আমারই বিধান তাহা
সব হৃদে না হই প্রকাশ, লীলা সে মোর
নির্বোধ মানব তুমি, বুদ্ধির অগম্য ইচ্ছা মোর
না পারো বুঝিতে
কি করিলি দম্ভমদে?
আমার ভৃত্য বলি দর্প করি ফিরি
আমারই বিধান দন্ড নিজ হস্তে করি!
প্রাণ কাড়ো নির্দ্বিধায়!
আরে মূঢ়, যে প্রাণ না পারো দিতে, লও তাহা কোন অধিকারে?
আপন দর্পমদে নাস্তিকতা করিলে প্রচার
যে অজ্ঞ আমার আলোতে
পাইলে পাইতে পারে সে আলো কালের গতিতে
কিন্তু যে অধম, না পাইয়া আমার আলো
মিথ্যা ভেক ধরি, আমার বিধান দন্ড হস্তে লয়ে ঘুরি
ত্রাসে জগৎ জনে, ক্ষমা নাহি তার!
ফিরে যাও!
অযুত নিযুত বর্ষ ফেরো ভুমন্ডলে
করিতে প্রচার ক্ষমার বাণী মোর
প্রেমেতে জ্বালিয়ে শিখা দ্বারে দ্বারে ফেরো
রক্ষা করিয়ো তারে দিয়া নিজ প্রাণ
যেনো নাস্তিকেও দেও আলো আমার সূর্য্য
তৃষ্ণা নিবারে এ ধরিত্রীর জল, বাতাস দেয় তার প্রাণ
বাধা নাহি তায়
তুমি কে নাশিতে জীবন তাহার?
প্রেমের সংসার রচো এই মোর বাণী
প্রাণের মন্দিরে বসি আমি মহাপ্রাণী।
(ধর্মের মোহ আদিমতম মোহ। হিংসা যার সহোদর। ন্যায্য হিংসা বলে কিছু হয় কি?
আমার এই লেখাটিতে যে ভাষা ব্যবহার করেছি তা বর্তমানে ব্যবহার হয় না জানি। তবু যা বলতে চাই, তা এ ভাষায় বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলাম, তাই এভাবেই বললাম। ধৈর্য্যের পরীক্ষায় ফেলছিনা, আশা করি আমার বন্ধুরা তা বুঝবেন।)