Skip to main content

তুমি বলো, তুমি মিথ্যা প্রশংসা শুনতে চাও না তাই শুনতে যাও যা তোমায় উন্নত করবে?
       ধরো, তুমি একজন নাবিক। খুব খারাপ নাবিক। যদিও তুমি শুনতে চাও না তুমি খারাপ নাবিক। তাই আমি তোমায় বললাম, তুমি ভীষণ ভালো নাবিক।
       তুমি জাহাজ নিয়ে সমুদ্র পাড়ি দিলে। ভাবতে পারছ কি হতে চলেছে? হয় তো তুমি গন্তব্যে পোঁছালেই না, কিম্বা ফিরে আসতেই পারলে না। তুমি আর জাহাজ দুটোই চরম ক্ষতির সম্মুখীন হলে। হতেই তো পারে, না?
       এ কথাগুলো সক্রেটিসের কথা। মুশকিল হল আমাদের যারা "বিরাট শিশু", মানে আর কি যারা দেশ নিয়ে খেলছে, কি বিশ্ব নিয়ে খেলছে, তারা সবাই শুনতে চায় তারা দুরন্ত নাবিক। যে জাহাজ তার ভাসিয়েছে, আরো বড় মুশকিলের কথা যে সে জাহাজে আমরাও আছি। আয়রনি হল, আমরাই নাবিকের আসনের ভাগ্যনির্মাতা, তাই পরোক্ষভাবের নিজের ও দেশের ভাগ্যের দায়ও আমাদেরই।
       আপনি বলবেন, এ গল্প তো "রাজা তোর কাপড় কোথায়" এর মতই। ঠিক তা নয়। সেখানে সেই শিশুটি সরলতা থেকে বলেছিল। সেই শিশুগুলো এখন বড় হয়ে গেছে যে। সরলতা আর কই? আর বাকি শিশুরা এখন মোবাইলের কৃত্রিম আলোতে, কৃত্রিম খেলায় মগ্ন, সেখানে অঢেল আমোদ যোগানের ব্যবস্থা করা আছে রাজার নির্দেশে। তবে উপায়?
       গুরুদেবের ফকির বা ঠাকুর্দারা? এ কথাটা মনে আসেনি তা নয় বুঝলেন। কিন্তু দেদার ইন্দ্রিয়সুখের বিপণনের যুগে সে বিশু পাগল কি আর তার সে পাগল মাথাটাকেও ঠিক রাখতে পেরেছে? সেখানে কথা হয়েছিল প্রকৃতির বরাদ্দ মদের খোঁজ যারা না পায় বা রসিক নয় তারাই শুঁড়িখানায় ঢোকে। নরকেও সৌন্দর্য আছে, সে নরকবাসীর চোখে পড়ে না, এই নাকি তাদের সব চাইতে বড় অভিশাপ।
       এখন কথা হচ্ছে, প্রকৃতিবরাদ্দ সেই সুষমাময় মদের যোগান কি আর আছে? নেই যে সে তো বাচ্চাটার সেই হাপুস নয়নে কান্নাই প্রমাণ - ফিরিয়ে দাও আমার সে সুস্থ পরিবেশ, তার অঙ্গীকার... তোমরা বেইমান.. মিথ্যুক!
       তবে কে বলবে? কে বুঝবে? মহাভারতের সেই "ম্যায় মহাকাল হুঁ"? কিন্তু কাউকে তো একটা বলতেই হবে, নাবিক তুমি ভালো নাবিক নও। জাহাজ যে ডুবছে। কিন্তু রাজার সে ডেরায় বিরোধী কেন, সবাই ঢোকে। বেরিয়েই রাজার ভাষায় কথা বলে। আপনারা বলবেন, মগজধোলাই। আমি বলি, না না, মগজসুরা। কয়েক বিন্দু পান করলেই বলবেন, "আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে...আমার চোখে তো সকলই নবীন সকলই বিমল।" কি জ্বালা বলুন তো।
       আর রঞ্জন? সে নন্দিনীকে খুঁজতে বেরিয়েছে। তার হাতে শুকনো রঙ্গনের মালা। কেউ বলে সে নাকি রাজার ডেরায়, কেউ বলে সে নাকি আর নেই, কেউ বলে সে আকাশের তারা হয়েছে, কেউ বলে ব্রহ্মজ্ঞানী হয়েছে। রঞ্জন বিশ্বাস করে না জানেন। আমার কেন জানি খালি মনে হয় গলিঘুঁজিগুলো খুঁজে দেখা দরকার একটু। সে থাকলে সেখানেই থাকবে। রাজপথে বড় বড় উৎসবেয় আয়োজন। সেখানে কি সে যাবে?
       একটা কথা বলে শেষ করি। সেদিন এসি ঘরে, নানা শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে এক বসে এক সন্ন্যাসী কি বলল জানেন? ব্রহ্মজ্ঞান হওয়ার আগে সংসারের এই দুর্দশা দেখে মানুষ নাকি বলে - "হোয়াট!!!!😟"
       তারপর যেই না ব্রেহ্মজ্ঞান হয়, অমনি হাসি মুখে হাত উলটে, বলে, "সো হোয়াট😊😊"
       এখন হিমালয়ের গুহায়, মানে নাকি যেখানে গুহাভাড়া করে ধ্যানধুন করা যায়, সেই হিমেল বাতাসের সব্বনেশে ঘুমের ছোঁয়ায় সব্বার মগজ ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে নাকি গো.. গেলে চলবেনি... নন্দিনীকে আমাদের চাই.... রঞ্জনকে চেনাবে তো সেই.... সে শিশু না, ঠাকুর্দা-ফকির না, চাই তাকেই..