একদিন আমাদের আইনের ভয় দেখিয়ে বোঝাতে হয়েছিল, ওরে জ্যান্ত একটা মানুষকে চিতায় পোড়ানোটা অমানবিক। "মেয়েছেলে তো? মানুষ বলছ যে?" তবু সে মানুষটার সাহসী বিবেকের সামনে মানবহৃদয়ের আদিম আইনটা চোখে পড়েছিল। আসলে বিবেক ঘুমানো আর বিবেক জাগাটা মস্ত বুজরুকি মার্কা কথা একটা। ভীতু বিবেক আর সাহসী বিবেক - এই দুটোই হয়। সাহসী বিবেকের একটা লোক সামনে দাঁড়ালেই অমনি ভীতু বিবেকীগুলো "হ্যাঁ তো...তাই তো...আগেই জানতাম" বলতে বলতে পিছু পিছু এসে দাঁড়ায়।
সেরকম আরেকবার বোঝাতে হল না এই সব বেদান্তজ্ঞানীর বংশধরদের, ওর মেয়েদের মধ্যে যতও সতীত্বের মহত্ব, বৈধব্যর শুদ্ধতার ধাঁধাঁলো আদর্শ আনিস, তাদেরও যে একখানা করে পিট্যুইটারী আছে বাপ! নদীর স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ হলে বন্যা হয়, আর বন্যার স্রোতে শ্বেতশুভ্র কমলাসনে শান্ত হয়ে বসে থাকার রিস্ক কোনো ব্রহ্ম নেবেনা। অগত্যা স্বাভাবিক গতিতে বিয়ের ব্যবস্থা কর। যেমন নিজেদের বেলায় করিস। তা সে লোকটাকেও কি কম হেনস্থা হতে হয়েছিল? হয়নি তো না?
তবে এবেলায় দেখলুম তারা নিজেরাই এসে রুখে দাঁড়ালেন। জয়ী হলেন। এ বিরাট বড় কথা।
কিন্তু ধর্মের গতির মোড় ফিরিয়ে তাকে অন্যত্র না পাঠালে মনুষ্যসমাজকে এর মাশুল দিতে দিতে শতাব্দীর পর শতাব্দী পেরোতেই হবে। নিজেদেরই এককালে বানানো পথ, আজ যদি কাঁটাঝোপ হয়ে যায়, তার নিষ্কাশন অবশ্যম্ভাবী। বর্তমান যুগের ধর্মের ভাষা তো পেয়ে গেছি আমরা - মনুষ্যত্ব। বাকি অলৌকিক, পৌরাণিক, অধ্যাত্মিক ইত্যাদি চর্চা থেকে রাষ্ট্র নিজেকে যত শীঘ্রমুক্ত করে ততই মঙ্গল। বাকিটা থাক ব্যক্তিগত।
[http://www.bbc.co.uk/news/world-asia-india-40897519]