চৌমাথায় প্রচণ্ড যানজট। তারস্বরে যে যার মত নিজের নিজের গাড়ির হর্ণ দিচ্ছে। তার উপর মাইকে চলছে সঙ্কীর্তন। সুর যেখানে গিয়ে শেষ হয়, তাদের কণ্ঠস্বর সেখান থেকে শুরু হচ্ছে যেন।
বাইকে বসে আছি। সামনের মানুষটার গলার আওয়াজই শোনা যাচ্ছে না। কেউ কথা বলছি না। শুধু অপেক্ষা করছি। শুধু বিরক্ত হচ্ছি।
পাশে একটা টোটোতে চোখ পড়ল। বছর কুড়ির একটা ছেলে আর তার মা। পাশাপাশি বসে। তারাও জ্যামে আটকে। দুজনে হাতের ইশারায় কথা বলছে। ছেলেটা হাতের চলনে ভাষার পর ভাষা তৈরি করে যাচ্ছে। মা মাথা নেড়ে নেড়ে শুনছে। কখনও হাসছে। কখনও গম্ভীর হয়ে যাচ্ছে। না মাইকের আওয়াজ বাধা হচ্ছে, না গাড়ির হর্ণ, না যানজটে আটকে পড়া "স্বাভাবিক" মানুষের চীৎকার।
ওদের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার চারপাশ থেকে যেন সব কোলাহল মিলিয়ে যেতে লাগল। ছেলেটা ভীষণ হাসছে। তার মা-ও। তাদের হাসির দমকে কেঁপে কেঁপে উঠছে টোটো।
হঠাৎ এত খুশী হয়ে গেল মনটা। এত উৎফুল্ল, এত ঝরঝরে। ভাষা কি ভীষণ অপ্রতিরোধ্য, যদি বলার তাগিদ থাকে। এই তাগিদটুকু থাক। না হারাক।