বৃদ্ধার পায়ে একটা পেরেক ফুটেছিল
ছেঁড়া চটিটা ভেদ করে পেরেকটা ঢুকেছিল
যেমন সব স্বপ্নগুলো ভেদ করেছে দুঃস্বপ্নেরা
রাস্তায় অল্প লাইটের আলো
দু'জন লোক যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে, অপরিচিত।
বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করল, এভাবে দাঁড়িয়ে?
কিছু কি হয়েছে আপনার?
বৃদ্ধার হাতে ধরা পেরেকটা তখনও,
অপরিচিত হাতটা এগিয়ে বৃদ্ধার পা স্পর্শ করল
অপরিচিত দুটো চোখ পায়ের কাছে ঝুঁকে দেখল-
কোনো ক্ষত হয়েছে কিনা, রক্ত বেরিয়েছে কি?
অপরিচিত বৃদ্ধার মুখে পরিচিত যন্ত্রণার চেয়ে লজ্জার আভা ছড়িয়ে পড়ল।
পরিচিত রক্ত নেই।
লোক দু'জন বৃদ্ধাকে আশ্বস্ত করে এগিয়ে গেলো
বৃদ্ধার সারা শরীরে মুখে কুণ্ঠা, চোখে সকৃতজ্ঞ আবেগ - 'এ ভাবে এগিয়ে আসে না কেউ আজকাল'...
বৃদ্ধার ধরে আসা গলায় এবার অপরিচিতদের লজ্জিত হওয়ার পালা।
তখন সন্ধ্যে। রাস্তায় স্ট্রিট লাইটের মৃদু আলো।
ওদের মধ্যে একজন অন্যমনস্ক হল,
কয়েক শতাব্দী আগে,
একজন লোক এভাবেই পথে পথে ঘুরে ফিরেছিল, আমাদের অন্যের পায়ের কাঁটা বের করতে শেখাবে বলে,
বলেছিল মানুষ হয়ে জন্মানোর এটাই সব চেয়ে বড় সাধনা।
লোকটাকে ক্রুশবিদ্ধ হতে হয়েছিল
মৃত্যু পর্যন্ত কেউ এগিয়ে গিয়ে ওকে বাঁচাবার সাহস করেনি। লোকটা ওভাবেই মারা গিয়েছিল।
আজও এগোয় না অনেকেই
ক্রুশবিদ্ধ দেখেও মুখ ফিরিয়ে ফিরে যায়
অথচ লোকটা বলেছিল, এটাই সাধনা।
তবু আজও লোকটা লুকিয়ে লুকিয়ে আসে, বুকের ভিতর কোন গত্তে থাকে, মাঝে মাঝেই বলে -
"কি গো, তাকাবে না আমার দিকে?"
(ছবিঃ সুমন)