Skip to main content

আজ আমার বাংলা সিরিয়ালগুলোর উপর রাগ কিছুটা কমল। আসলে খানিক দিব্যজ্ঞান পেলুম কিনা, তাই। 
        তিনি গরীব। ছেলে বিজ্ঞান পড়বে। খুব নাম করা একজন শিক্ষকের কাছে গেলেন। তিনি এখানকার বহু দশকের নাম করা শিক্ষক। উচ্চামাধ্যমিক স্কুলে চাকরিও করেছেন। এখন অবসরপ্রাপ্ত।
        তা তিনি ছাত্রের মাকে বলেছেন, মাসের প্রথম দিনের ক্লাসে টাকা পাঠাতে না পারলে সেই মাসে যেন না পাঠান ছাত্রকে। 
        তার মায়ের একমাসের টাকা দিতে দেরি হল। শিক্ষক ছাত্রকে ঘরে ফেরালেন। মা পরেরদিন কথা বলতে গেলেন, উনি ঘরের ভিতর থেকে বললেন, কি চাই? 
        রাস্তায় দাঁড়ানো মহিলা বললেন, টাকা এনেছি। 
        উনি বললেন, আচ্ছা ভিতরে আসুন।
        আরেকজন শিক্ষক বললেন, প্রত্যেক মাসে আমার টাকাটা দিতে পারবেন কিনা আগে ভেবে দেখুন কাকিমা, তবেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

        ছেলেটা তবু পড়বে। বাবা-মা খেয়ে না-খেয়ে টাকাটা জোগাড় করবেন। এই ছেলেটা নাকি মানবিকতা শিখবে। এ নাকি ভবিষ্যতে জনদরদী ডাক্তার-উকিল-রাজনীতিবিদ হবে। মানে, হতে হবে। এই সমাজই আশা করবে তার কাছ থেকে। 
অর্থ আর মানবিকতা দুটো আপাত বিরোধী শব্দ তো না। দারিদ্র্যটা লজ্জার নয়, দৈন্যটা লজ্জার।
        ভারসাম্যহীন সমাজে নির্লজ্জের মত অহংকারী, পৈশাচিক হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচাটা অসম্ভব কিছু না। দৈন্যদশার লজ্জা যে সমাজে নেই, সেখানে স্বাভাবিক অনুভব থাকাটাও বিড়ম্বনা। পদে পদে অপদস্থ হতে হয় সংখ্যালঘু হওয়ার অপমানে। 
"আপনি যখন ঘরে ডেকে কথা বললেন, আপনার মানবিক মুখটা বুঝলাম। আমিও গ্র‍্যাজুয়েট। বাংলা অনার্স।" 
        মহিলার চোখের কোণায় জল। আমার ঘরের সত্যিকারের মহাপুরুষদের ছবিগুলো ঝাপসা। অ্যালিয়েন ওরা। কমদামী শাড়ি পরা মানুষের সাথে ভালো করে কথা বললেও মহান হওয়া যায়! হায় চণ্ডীদাস! হায় মহাপ্রভু! হায় বিবেকানন্দ! 
        ময়ূরের বাচ্চা কিসে হয়? এটা নিয়ে পোস্ট লেখার ছিল না? লিখছি, হাতটা ধুয়ে আসি। মহানতার আঁশটে গন্ধ লেগে আছে, বমি পাচ্ছে যে! ধুয়ে আসি।