সৌরভ ভট্টাচার্য
26 December 2020
অনিকেতের লাল সোয়েটারটার দিকে চোখ পড়ল। কাছে গিয়ে প্রাইস ট্যাগটা দেখল। বাজেটের মধ্যে। একটা মেয়ে এগিয়ে এসে সোয়েটারটা অনিকেতের হাতে দিয়ে বলল, ট্রায়াল দেবেন তো?
অনিকেত মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। কিন্তু মেয়েটাকে দেখে খটকা লাগল। কোথায় যেন দেখেছে।
যা হোক, ট্রায়াল রুমে ঢুকে গায়ের জ্যাকেটটা খুলে হুকে লাগিয়ে একবার আয়নায় নিজেকে দেখল। ভালোই দেখতে তাকে। যতবার নিজের দিকে তাকায় ততবার নিজেকে প্রশংসাই করে। শুধু একটু ভুঁড়ি হয়ে যাচ্ছে এই যা। এ সব এই লকডাউনের জন্য। কবে যে ইউনিভার্সিটিটা আবার খুলবে।
যা হোক লাল সোয়েটারটা গায়ে দিল। নতুন জামার গন্ধ দারুণ লাগে অনিকেতের। আগে তো পুজোর নতুন জুতো পর্যন্ত মাথার কাছে নিয়ে শুতো। অনেক আগে অবশ্য, প্রাইমারি স্কুলে পড়ত তখন।
বাইরে "দিল চাহাতা হ্যায়" গানটা হচ্ছে। মলের ভিতরটা বেশ গরম। মেয়েটা কি কলেজে পড়ত? দেখতে তো বেশ ঘ্যামা।
অনিকেত মোবাইলটা বার করে আয়নায় নিজের একটা ছবি তুলল। মুখে সার্জিকাল মাস্ক। গায়ে লাল সোয়েটার। নীল জিন্সের প্যান্ট। ভালোই লাগছে। চশমাটা আবার ভেপসে গেছে এই এক ঝামেলা।
ছবিটা মীরাজকে পাঠাতে হবে। ওর ড্রেস সেন্স ভালো। কিন্তু মালটা হোয়াটস অ্যাপে এখন অন তো?
পাঠালো। নীল দাগ। এখন অপেক্ষা করতে হবে। মীরাজ সময় নিয়ে দেখবে। পুজোর সময় হলে এই সময়টুকুও ট্রায়াল রুমে থাকা দায়। লজ্জা লাগে। বাইরে লাইন পড়ে যায়, যেন শিয়ালদা স্টেশানে বাথরুমের লাইন শালা।
টুং।
মীরাজ নিশ্চয়।
"তোর পিছনে কে?"
উফ শালা এখন বাওয়াল করার মুডে আছে। চশমাটা মুছে উত্তর লিখতে যাবে, অনিকেত চমকে উঠল। তাই তো, তার পিছনে মেয়েটা! সঙ্গে সঙ্গে মাথায় খেলে গেল বিদ্যুতের মত একটা খবরের হেডিং - শপিং মলে এক যুবতীর আত্মহত্যা। গত সপ্তাহের ঘটনা।