মধ্যরাতের প্ল্যাটফর্ম
শেষ ট্রেন কখন বেরিয়ে গেছে কেউ খেয়াল করেনি
শুধু ঝিম ধরা চোখে
সবুজ পতাকাটা কোনো রকমে দেখিয়ে
ঘরে গিয়ে কাঠের বেঞ্চে শুয়ে পড়েছে সনাতন হালদার
সামনের ডিসেম্বরে অবসর
ল্যাজ গুটিয়ে শুয়ে থাকা তিনটে কুকুরের পাশে
ন্যাতাকাতার মত কাপড়ে জড়িয়ে তিনটে বাচ্চা নিয়ে শুয়ে সুকিয়া
তার বর ছেড়ে গেছে
কোনো এক ভোরের মেল ট্রেনে
বছর ঘুরে এলো
সুকিয়া ভোরের মেল ট্রেনের দিকে তাকায়
রেলের তারের ফাঁক দিয়ে
সূর্যটা রোজ গরম তাওয়ার মত উঠে তাকে বলে -
ধাপ্পা!
সামনে দুর্গাপূজো
কুয়াশায় লাল সিগন্যালের আলোটা অস্পষ্ট
তবু তার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে অনর্গল কথা বলে চলেছে সুজন মাঝি
মাধ্যমিক পাশ, তারপর হঠাৎ-ই মাথার ব্যামো
দাদা বৌদি খেতে দেয় না,
জমির ভাগ নিতে নাকি
ধুতরোর ফল খাইয়েছে গরম দুধে মিশিয়ে
কেউ কেউ বলে
চায়ের দোকানের পাশে সার দেওয়া ঢাকির দল
ঘুমাচ্ছে
ভোর হলে ওই কুয়োতলার পাশ দিয়ে হেঁটে
বড় রাস্তার মোড়ে গিয়ে দাঁড়াবে
বাদ্যির জোর, আর স্বাস্থ্যের বহর দেখে নিয়ে যাবে
খোরাকি বুঝিয়ে দেবে যেতে যেতে রাস্তায়
এখন মাঝরাত
ঘুমন্ত শহরে জেগে আছে
সুজন মাঝি
কয়েকটা প্যাণ্ডেলওয়ালা
কাজ শেষের তাড়ায়
সুকিয়ার শুকনো বুকে ঢুঁ মারা
দেড় বছরের শীর্ণপ্রাণী
আর কুয়াশায় কাঁপা
লাল সিগন্যাল