টুপ করে ঢিলটা ডুবে গেল। ছাগলটা লাফ দিয়ে বলল, আরেব্বাস! কত্তা আপনার কি টিপ! এক টিপে ফড়িংটাকে ঘা দিলেন!
কত্তা বলল, আগে এক টিপে বাঘ মারতাম রে। তখন তো তুই জন্মাসইনি। আমাদের পূর্বপুরুষেরা ঘোড়া, সিংহ এই সব নিয়ে হাঁটত। ছাগল কি কেউ নিত রে!
ছাগলটা উদাস হয়ে বলল, তাও...
কত্তা বলল, উদাস হোস না। তুই কি আর যে সে ছাগল!
কত্তা এবার তাক করে জামরুল গাছে টিপ করে মারলেন। কে জানত একটা ভীমরুলের চাক ছিল। কত্তা আর ছাগলের দিকে হুল উঁচিয়ে ধেয়ে এলো ভীমরুলের দল। ছাগলটা দৌড়াতে দৌড়াতে চীৎকার করে বলল, কত্তা থাকতে তোরা আমায় কামড়াবি? আমার গায়ে কি আর জমিদারি রক্ত আছে রে বোকা। তোরা না খাস তালুকের ভীমরুল!
কত্তা বিছানায় শুয়ে। ফুলেছেন এমন যেন দুটো কত্তাবাবা!
ছাগলটা কত্তাবাবার পাশে, ধবধবে সাদা চাদরে বসে বসে আঙুর খাচ্ছে। কত্তাবাবা তার দিকে তাকিয়ে বলল, আমায় কেমন দেখাচ্ছে রে?
ছাগল চোখ বুজে আঙুর চিবোতে চিবোতে বলল, মনে হচ্ছে আপনি সুন্দরবনে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে ফিরলেন কত্তা.... কি সাহস আপনার! ওই বজ্জাৎ ভীমরুলগুলো যখন আমার দিকে ধেয়ে আসছে, আপনি নিজের ছাতি খুলে দিয়ে বললেন, আমি থাকতে তোরা একটা ইতর প্রাণীকে কামড়াবি রে... খাস তালুকের ভীমরুল হয়েও তোদের এত নীচে রুচি নেমেছে!... তখনই তো ওরা ধাঁ করে আপনার দিকে ধেয়ে গেল কত্তা....
কত্তাবাবা চোখ বন্ধ করলেন। দুটো লাল গরম কানের থেকে এত জোরে দমকা হল্কা বেরোলে যে মুহূর্তে বাটির ক'টা আঙুর চুপসে গেল। ছাগলটা মুচকি হেসে এক লাফে বারান্দা দিয়ে নেমে কচি ঘাস খেতে নেমে গেল মাঠে।