কলকাতার বুকে বহু বছর আগে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছিল নক্ষত্রস্বরূপ শিল্পী উস্তাদ আমির খানের। ১৩ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৪। খাঁ সাহেবের বয়েস ছিল ৬১।
গতকাল রাতে কেকের খবরটা পাওয়া ইস্তক ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছিল। আজ সকাল থেকে পেপারগুলো পড়ার পর আরো মনটা খারাপ। জানি না এসব কনসার্ট ডাক্তারের ব্যবস্থা থাকে কিনা। আচমকা কোনো সমস্যা হলে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ রাখা হয় কিনা, জানি না। কিন্তু যে শহরকে এক সময় শিল্পীর চূড়ান্ত পরীক্ষাস্থল বলা হত, সে শহরে এমন মর্মান্তিক ঘটনা আরো মর্মান্তিক লাগে।
শিল্পী তার সৃষ্টিতে বাঁচেন, বিতর্কে বাঁচেন না। বিতর্ক, সঙ্কীর্ণ বুদ্ধির আস্ফালন, এসব যাক। এমনিতেই বড় কঠিন সময় দিয়ে যাচ্ছি আমরা। এর মধ্যে আরো জটিল পরিস্থিতি তৈরি করার আর দরকার নেই। যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, তা যেন ভুলে যাই। তুচ্ছকে তুচ্ছ বলে না জানলে সব দিক থেকে বিপদ। অতি তুচ্ছ একটা ধুলোর কণাও যদি চোখে এসে পড়ে তবে চারদিক ঝাপসা করে দেয়। ধুলো রাস্তাতেই থাকুক, চোখে না।
সুর বাঁচুক। গান থাকুক। ভালোবাসা সব মানসিক দৈন্যকে দূর করে দেয়। ভালোবাসা আসুক। আরো আরো। এই প্রার্থনা। আর এই প্রার্থনার সঙ্গেই আমার শ্রদ্ধা শিল্পীর প্রতি। মনে রাখি যেন তিনি শেষ নিঃশ্বাসটুকু অবধি সুরকে দিয়ে গেলেন। তাই আমরা সব অ-সুর বিতর্ক, নিন্দাবাদ বাদ দিয়ে সুরে থেকেই ওনার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করি। আর যেন মনে রাখি, কে বড় আর কে ছোটো সে বিচারের ভার চিরটাকাল মহাকালেরই হাতে। সে দায় তার উপরে ন্যস্ত রেখেই আমরা যেন সুস্থ হই, সবল হই, উদার হই।