যেদিন জানল মৈত্রেয়ী
নিজেকে শোষিত হতে দেওয়া ছাড়াও
তার আরো অনেক কিছু পৃথিবীকে দেওয়ার ছিল
সেদিন তার শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস পড়েছিল
সবটুকু জমাট বাঁধা ব্যথা
ওইটুকুতেই বেরিয়ে গিয়েছিল মনে হয়েছিল
কিন্তু না
ও তো শুধুমাত্র শিখাটুকু ছিল
বুকের ভিতর জ্বলছিল দাবানল
জানতে পারেনি
যেহেতু তার কোনো প্রতিভা নেই
তাই সংসারে ফাইফরমাশ খাটা শরীর দিয়ে
এই তো তার ভবিতব্য হবে
সে শরীরেও যে তার অধিকার নেই
আইনে বাঁধাপড়া মানুষটা বুঝিয়ে দিয়েছিল তো
বিয়ে মানে
সমাজ আইন আর বিধাতার
যোগসাজশ
নিজেকে মালুম পেলো
এই তুমুল শরীর খারাপটা হওয়ার পর
প্রায় জ্ঞান ছিল না সাত আটদিন!
জ্ঞান ফিরল তো এমন দুর্বল হল
যেন তার হয়ে অন্য কেউ শ্বাস নিয়ে নিলে ভালো হয়
আশ্চর্য হল
গোটা সংসারে একটা চিড়ও ধরেনি
সে এতদিন না থাকাতেও
আরো আশ্চর্য হল
নিজেকে এত তুচ্ছ মনে হওয়ার পরও
তার তীব্র সাধ হল বাঁচতে
একা
সমাজ, আইন আর বিধাতাকে সরিয়ে
বাঁচবে সে
আর অন্তর্যামী
বিড়ি বাঁধতে পারে, স্কুলে রান্না করতে পারে
মন্দিরে বাসন মাজতে পারে, বড়ি দিতে পারে, সেলাই করতে পারে, এমনকি ফোর অবধি বাচ্চাদের পড়াতেও তো পারে!
আরো অনেক কিছুই তো পারে!
শুধু আর ভালোবাসতে পারে না
যে ভালোবাসায় থেকে থেকে
লালা বীর্য স্নাত হতে হয়
অনিচ্ছাতেও
তারপর কি হল?
তেমন কিছু না
মেয়েটা সংসার ছাড়ল না
কিন্তু যে ফাটল ধরে গেল
সে ফাটলে ঘুণ ধরালো না
সুখ জমালো
অল্প অল্প করে
এখন তার সঙ্গে বাঁচে
সদ্যোজাত
তার গায়ের গন্ধমাখা স্বপ্ন একটা
সে স্বাধীন হবে
একা হবে
অন্তর্যামীর সঙ্গে
কিন্তু
বিবাগী হবে না