Skip to main content
kintu

 

খগেনবাবু জ্বর থেকে উঠেই সক্কলকে হুঙ্কার দিয়ে বললেন, কই রে তোদের বিজ্ঞান? কই? শেষে তো আমাকে বাঁচালো প্যারাসিটামল, অ্যাজিথ্রোমাইসিন আর কাফ সিরাপ।

একে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট, তায় ভীষণ বদরাগী মানুষ, তায় আবার ধনী মানুষ। কেউ তেমন রা কাটতে পারছে না। শীতের সন্ধ্যেতে জবুথবু হয়ে বসে সবাই। এদিকে খগেনবাবু বলে চলেছেন,

এই যে লোকগুলো অ্যাদ্দিন ধরে গুহায় আটকে থাকল, কোন বিজ্ঞান বাঁচাতে এলো? এলো কিছু ড্রিলিং মেশিন, হাতুড়ি-ছেনি, আর কিছু ভালো মানুষের পো। যারা দিনরাত এক করে দিল। কই বিজ্ঞান তো কিছুই করল না!

তারপর ধর, আমার মাসির ছেলে। গাড়ি নিয়ে গত্তে ঢুকে গেল। তারপর ইয়াব্বড় ক্রেন এনে তাকে উদ্ধার করা গেল। তারপর এদিক, ওদিক প্রায় খান তিনেক প্লেট বসিয়ে তাকে দাঁড় করানো গেল। মানে আমার মাসতুতো দাদাকে। কে জানিস সে? বাগনানের বিখ্যাত কবাডি প্লেয়ার। প্রলয় সামন্ত। তবে?

একজন ক্লাবের নতুন সদস্য ক্ষীণ কণ্ঠে বললে, আজ্ঞে এইসবই তো বিজ্ঞানের আশীর্বাদ।

খগেনবাবু ক্ষেপে গিয়ে বললেন, তোমার মুণ্ডু.... বিজ্ঞান একটা কনসেপসান। আসল হল প্যারাসিটামল। ক্রেন। আর স্টিলের পাত।

গগন বলল, তার মানে বলতে চাও বিজ্ঞান বলে কিছু হয় নাকো…..

খগেন বলল, হয়, আলবাত হয়। স্কুলে যা পড়ানো হয়। তাই বিজ্ঞান। কিন্তু কাজে যা লাগে, সে কেন বিজ্ঞান হতে যাবে বাপু? সে তো প্যারাসিটামল….

গগন থামিয়ে দিয়ে বলল, বুঝেছি। কিন্তু….

“এই কিন্তুতেই তো সব সারল হে।” খগেন চোখ বন্ধ করে, পাশে জুড়িয়ে যাওয়া ঠাণ্ডা চায়ে চুমুক দিল।

তারপর খগেন বলল, এই কথাটাই বলতে চাই ভায়া.. যাই জানো…. শেষে একটা “কিন্তু” না জুড়ে দিলে সবটাই কেমন জোলো হয়ে যায়…. এই “কিন্তু” হল হাওড়া স্টেশান… চাদ্দিকে কেমন রেলের পথ…. এদিকে একটু বাঁক নাও… কন্যাকুমারী….. ওদিকে একটু বাঁক নাও…. দিল্লী….. কি আশ্চর্য!

গগন বলল, মানুষ স্থির কিছু জানবে না তাই বলে?

খগেন ঠাণ্ডা চায়ের ভাঁড়টা শেষ করে বলল, না……

গগন মাথা চুলকে বলল, কিন্তু….

খগেন গগনের গালে একটা চিমটি দিয়ে বলল…. হুম হুম…. হচ্ছে…. এই তো হচ্ছে…..

 

(ছবি: Suman Das)