সৌরভ ভট্টাচার্য
14 April 2018
রামচন্দ্র গুহ - বরাবর আমার প্রিয় চিন্তাবিদ, লেখক। আগে টেলিগ্রাফে খুশবন্ত সিং এর আর্টিকেলের জন্য মুখিয়ে থাকতাম - Malice towards all, এখন রামচন্দ্র গুহর মত কয়েকজন columnist এর জন্য।
সুপ্রিমকোর্ট নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে চাপানউতোর চলছে। প্লেটোর মতে যে চারটে স্তম্ভের উপর সভ্যতা দাঁড়িয়ে থাকে তার একটা প্রধান হল Justice. সেখানে একটা বড় ধরণের সমস্যা আছে। তা লোকচক্ষু গোচর হয়েছে।
আমি আশাবাদী। নিরাশাবাদী হওয়ার মত লাক্সারী আমি বইতে পারি না। কিছু মানুষ গর্জাবেই। নইলে আজও দেশটা পরাধীনই থাকত। সেকালেও বহুলোক বিশ্বাস করতেন, ইংরাজ কোনোদিন দেশ ছেড়ে যাবে না। 'দুশো বছরের বাংলা প্রবন্ধ' সাহিত্য একাদেমি থেকে বেরোনো তার সাক্ষ্য রাখে।
টি এন শেষান যখন দুর্নীতি অনাচার নিয়ে বলছেন, তখন কেউ কেউ বলেছিল "এসব করে কি হবে। আমরা সব বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি।" টি এন শেষান বলেন, বেশ আপনার মায়ের যদি ক্যান্সার হয় তবে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখবেন। চিকিৎসায় ন্যূনতম সুস্থ হওয়ার প্রচেষ্টাও করবেন না। কারণ আপনি তো জানেন অবশেষে মারাই যাবেন।
বিদ্যাসাগর তাঁর বাল্যবিবাহ প্রবন্ধে লিখছেন, "অনবরত মৃত্তিকা খনন করিলে কতদিন বারি বিনির্গত না হইয়া পারে? কাষ্ঠে কাষ্ঠে অনবরত সংঘর্ষণ করিলে কতক্ষণ হুতাশন বিনিঃসৃত না হইয়া থাকিতে পারে? এবং অনবরত সত্যের অনুসন্ধান করিলে কতদিনই বা তাহা প্রকাশিত না হইয়া মিথ্যাজালে প্রচ্ছন্ন থাকিতে পারে?"
অবশেষে সেই কথাটাই, "তবু মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ"। লড়তেই হবে। লড়তেই হবে। আর আমার প্রিয় কবি যশোদির ভাষায় "মশালটা জ্বালিয়ে রাখতেই হবে।" বাকি নাকি কান্না, বুক ধড়ফড় নিরাশাবাদীদের বলতে হবে আপনারা নিরাশার অন্ধকারে ঘুমান, আমরা জেগে আছি, আর শেষ নিঃশ্বাস অবধি জেগে থাকব।