খ্রীষ্টের উৎস যতই প্রাচ্য হোক, খ্রীষ্ট আমাদের মানসে পাশ্চাত্যের সাদা চামড়ার ভগবান। ধনীর ভগবান। উন্নতশ্রেণীর মানুষের ভগবান। এক কালের শাসকের ভগবান। তাই খ্রীষ্টের প্রতি আনুগত্য, ঠিক "এক গালে চড় মারলে আরেক গাল বাড়িয়ে দাও" এর প্রতি আনুগত্য নয়। এ আনুগত্য পাশ্চাত্যের প্রথম বিশ্বের প্রতি আনুগত্য। কেক খাওয়া তার একটা প্রধান সাংকেতিক উদযাপন। কাল বেশ গ্রামের ভিতরের দিকে গিয়েছিলাম, সেখানেও দেখি কেকের দোকানের পর দোকান সাজানো। শহরে তো বেশ একটা উৎসব উৎসব ভাব। ছুটির ঘন্টা চারদিকে।
খ্রীষ্ট আমাদের মনীষীদের মানসলোকে গভীর আবেদন রেখেছেন। রবীন্দ্রনাথ, মহাত্মা, বিবেকানন্দ ইত্যাদি মহামানবদের লেখায় বারবার এসেছেন। কিন্তু সে খ্রীষ্টকে ভারত নেয়নি, ভারত নিয়েছে কেকের খ্রীষ্ট, সারারাতব্যাপী মোচ্ছবের খ্রীষ্ট, যাতে নাকি ওয়াইন খেলে আরো জাতে ওঠা যায়, গলার লকেটের খ্রীষ্ট, দেওয়ালের ক্রুশের খ্রীষ্ট। আর জগত নিয়েছে পোপের খ্রীষ্ট।
তবে খ্রীষ্ট আজ কোথায়? সব মহামানব চিরটাকাল যেথায় - সবল সতেজ অনুকম্পায়, ভালোবাসায়। ভালোবাসার কোনো নির্দিষ্ট ব্যাকরণ নেই, পুঁথি নেই, চারদেওয়ালের ঘেরাটোপ নেই, সে মন্দির মসজিদ চার্চ যাই বলো না কেন। ভালোবাসা নিজেই শাসন, নিজেই অভয়, সদা আত্মতৃপ্ত। তাকে ডাকা যায় না, সাড়া দেওয়া যায়। দল পাকিয়ে নয়। নিভৃতে একান্তে কিম্বা সতীর্থের ভাতৃত্বে।
সৌরভ ভট্টাচার্য
25 December 2018