Skip to main content

"এত দূরে গিয়ে ছাড়বি যেন আর ফিরে আসতে না পারে... এবার ফিরে এলে তোদের দুটোর পিঠে এই বাটামটা ভাঙব দেখিস”....

    একটা বস্তায় ভরে ছেড়ে এসেছিল। সাইকেলের পিছনে বস্তা ধরে বসেছিল ছোটোভাই। কথা বলছিল না, কাঁদছিল। জানে সে। প্যাডেলে চাপ দিতে বুকে লাগছিল। যেন খায়নি অনেকক্ষণ। অনেক ঘুরে ঘুরে মাঠে গিয়ে যখন ছাড়ল, তখনও বাচ্চাটা লেজ নেড়ে নেড়ে দুই ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে ছিল। যেন বেড়াতে নিয়ে এসেছে। ভাই একটা বিস্কুট ছুঁড়ে দিয়ে বলেছিল, যা!..... তারপরেই ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলেছিল। বলেছিল, দাদা, আমরা ওকে রোজ দেখতে আসব, আসবি?

    এসেছিল তারা। কিন্তু ওকে আর পায়নি। 
 

    বৃদ্ধ জানলার ধারে বসে বসে এই কথাগুলো ভাবছিলেন। যেন এই সেদিনের কথা। ভাই নেই আজ চার বছর হল। গলায় ক্যান্সার হয়েছিল। তার নিজের কোনো রোগ নেই, কিন্তু বৃদ্ধাবস্থাই তো একটা রোগ। 

    "আজ আপনার ছেলে আসবে না, ফোন করেছিল। সামনের মাসে চেষ্টা করবে বলেছে"।

    বৃদ্ধ জানলা থেকে মুখ ফেরালো না। উত্তরটা জানা। বাচ্চা কুকুরটার কথা মনে পড়ল। মনে হল যেন সে খুব ধারে কাছেই কোথাও আছে। হয় তো এই ঘরের খাটের তলায়। বৃদ্ধ মাথা নীচু করে খাটের তলায় ঝুঁকলেন। বৃদ্ধাশ্রমের ফাইফরমাশ খাটা কিশোরটা এসে জিজ্ঞাসা করল, কি খুঁজছ দাদু?

    বৃদ্ধ মাথাটা নীচু করেই বললেন, সেটাই দেখছি রে.... কিছু খোঁজার বাকি আছে নাকি আর....

    প্রত্যুত্তর নেই। বৃদ্ধের অপেক্ষাও নেই। আজকাল কারোর প্রত্যুত্তরের অপেক্ষাই নেই। কেউ দাঁড়ায় না আজকাল। সময় নেই।