Skip to main content

সাইকেলে ভর দিয়ে হাঁটতেন। সাইকেল চালাতেনও।

    রাস্তার পাশে মাঠ। কিছু বাচ্চা ফুটবল খেলছিল। বল এসে লাগল সাইকেলে। টাল সামলাতে না পেরে পড়লেন রাস্তায়। কনুই ছিলে রক্ত বেরোলো। কোমরে চোট পেলেন। ছেলেগুলো ভাবল উঠে যখন বসেছেন তখন নিশ্চয়ই দাঁড়িয়েও পড়বেন। উঠে সাইকেল চালিয়ে চলে যাবেন। তাই তারা হইহই করে "সরি দাদু… সরি সরি" বলতে বলতে মাঠে নেমে গেল।

    কিন্তু উনি উঠবেন কি করে? উঠতে তো একটা অবলম্বন লাগে। যেমন ওনার জুতো সারাইয়ের দোকানে একটা বাঁশ আছে। কালো। তার মাথায় একটা বাল্ব জ্বলে। একদিকে একটা হনুমানজীর ছবি আটকানো। উনি কাঁপতে কাঁপতে ওঠেন। হাত বাড়িয়ে দোকানে ঠেস দেওয়া সাইকেলটাকে ধরেন। উঠে পড়ে প্যাডেলে দেন চাপ।

    খেলা হচ্ছে। উনি বসে দেখছেন রাস্তার পাশে। সাইকেলটা ছেলেগুলো স্ট্যাণ্ড করে দাঁড় করিয়ে দিয়ে গেছে রাস্তার পাশে। কেউ কেউ তাকাচ্ছে। হয় তো ভাবছে উনি খেলা দেখছেন বসে বসে রাস্তার পাশে। কাকে ডাকবেন?

    বলটা আবার এসে পড়ল।

    ওরা চীৎকার করছে, দাদু শট মারো… মারো….

    উনি হাসলেন। হাতে করে বলটা দিয়ে ছুঁড়ে মারলেন। জোরে। বললেন, ওরে আমি দাঁড়াতে পারি না রে নিজে নিজে… সাইকেলটা এগিয়ে দে না রে কেউ… আমি দাঁড়াই। বাড়ি যাব।

    ছেলেগুলো তাকালো এ ওর দিকে। তারপর হইহই করে এসে ওনাকে সাইকেলটা এনে ওনাকে চড়িয়ে দিল। কেউ পায়ের দিকে তাকালো। কেউ কোমরের দিকে তাকালো।

    পরের দিন ফিরছেন। একই রাস্তা। মাঠটা যত এগিয়ে আসছে মনের মধ্যে একটা অজানা শঙ্কা কাজ করছে। কেন? সঙ্কোচ, নাকি ভয়?

    মাঠটা এলো। ছেলেগুলো খেলায় মত্ত। কেউ খেয়াল করল না।

    মাঠ পেরিয়ে গেলেন। কেউ খেয়াল করল না। ডাকলও না।

    অস্বস্তিটা কেটে গেছে। এবার কষ্ট হচ্ছে একটা।