সৌরভ ভট্টাচার্য
4 February 2018
বিশাল বড় ন্যাড়া গাছটার ডালে একটা ঘুড়ি আটকিয়ে। গাছটার থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে যে বস্তিটা, চার বছর আগে জন্মেছিল যে হামিদের ছেলে, সে হাফপ্যান্ট পরে দিনে কতবার যে ঘুড়িটা দেখতে আসে!
তার মা কাজে গেলে মায়ের সাথে কিছুটা যায়। গাছ তলায় দাঁড়ায়। উপরে তাকায়। রুবেয়া তাকায় না।
তার বাবা কাজে গেলে তার পিছন পিছন কিছুটা যায়। গাছটার তলায় দাঁড়ায়। উপরে তাকায়। হামিদ তাকায় না।
ক্রমে ঘুড়িটার কাগজ ছিঁড়ল। তারপর কঙ্কালটা বেরোতে লাগল ধীরে ধীরে। খুরশিদের চোখে জল এলো। হামিদ তাকাল না। রুবেয়াও না।
একদিন বাজারে ওরকম একটা ঘুড়ি দেখল নিতাইয়ের দোকানে। এক্কেবারে এক রকম। খুরশিদ দাঁড়িয়ে গেল। তাকিয়ে থাকল। তাকিয়েই থাকল। হামিদ দাঁড়াল না। রুবেয়া দাঁড়াল না। হঠাৎ খুশরিদের হাতে টান দিল ওরা। ওকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল। তাকে আর তার দৃষ্টিকে। তার বায়নাকে।
সেদিন ভোরে খুরশিদ দেখল একটুকরো কাগজ তাদের ঝুপড়ির ছাদে আটকিয়ে। ঘুড়িটার কাগজ। হামিদ দেখল না। রুবেয়া দেখল না। খুরশিদ ঝুপড়ির পাশের কারখানার পাঁচিলে উঠল। একটা কাঠি দিয়ে ঘুড়ির কাগজটা খুঁচিয়ে নীচে ফেলল। নিজেও নীচে এলো।
তার পকেটের মধ্যে রঙীন কাগজ। হামিদ দেখল না। রুবেয়া কাপড় কাচার সময় বলল, নোংরা কাগজ!
খুশরিদ শুনতে পেলো না। ও ঘুমোচ্ছে।