ধান ক্ষেতের নাগাল ঘেঁষে থালার মত চাঁদ। ধানগাছগুলো সন্ধ্যের হাওয়ায় সারা শরীর দুলিয়ে শিহরণ জাগিয়ে তুলেছে ক্ষেতে। হালকা সরসর শব্দ উঠছে নূপুরের মত কোনো অলক্ষ্য পায়ের। সে পায়ে যেন আলতা। চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত পাকা ধানের শরীর। বিচ্ছুরিত সাদা দুধের মত আলো একে অন্যকে ছুঁয়ে খেলছে।
কয়েকটা পোকা কিছু গাছের মজ্জার ভিতর ঢুকে শুষে নিচ্ছে প্রাণরস, কাণ্ডের সাথে হাওয়া দুলতে দুলতে।
যখন ধান কাটা হল, কিছু ধান হল খারিজ। ওদের মজ্জা মৃত। জ্যোৎস্না সেদিনও হল। কাটা ধানের গোড়াগুলোর পাশে পড়ে পরিত্যক্ত মজ্জামৃত ধানেরা। জ্যোৎস্নার লাবণ্য কিছু কম ছিল না। বাতাস শুধু একা একা ফিরছিল সারা ক্ষেত জুড়ে, উদাস হয়ে। কোনো নূপুরের শব্দ নেই। যেন আলতাহীন কার পা থমকে দাঁড়িয়ে ক্ষেতের কোনো এক প্রান্তে।
গ্রামের সবচেয়ে প্রবীণতম বৃদ্ধ মানুষটা শিব মন্দিরের চাতালে বসে। পোকা খুঁজছে। মজ্জা খাওয়া পোকা। বাতিল ধানের পরিমাণ যেন বেড়ে যাচ্ছে চারদিকে। বৃদ্ধ অস্থির হয়ে উঠল। আলতা পায়ের নূপুর হারালো কোথায়? ভুলটা কোথায় হচ্ছে?
সৌরভ ভট্টাচার্য
26 April 2017