সৌরভ ভট্টাচার্য
8 January 2018
কারোর সাথে কথা বলা মানে যেন হাঁটতে যাওয়া তার সাথে। কোনো একটা বিষয়ে কথা শুরু হওয়া মানে যেন কোনো একটা রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু হওয়া। খানিকটা এগিয়ে এলো মোড়। অনেকগুলো বিষয়ে যাওয়ার অবকাশ। কে সিদ্ধান্ত নেবে, কোন দিকে যাওয়া হবে? কোনো কথা যাবে সমুদ্রের ধারে, কোনো কথা যাবে জঙ্গলে, কোনো কথা যাবে বাজারে, কিম্বা হেঁশেলে, কখনও বা নিষিদ্ধপল্লীতে। কেউ একজন সিদ্ধান্ত নিল, কথা চলল সেই পথে, মানে আবার হাঁটা তার সাথে। চলতে ভালো লাগল তো এগোনো গেল, নইলে খানিক এগিয়ে আবার গলি খোঁজার চেষ্টা, পথ বদলাতে হবে যে।
নির্বাক মনোযোগী শ্রোতা হওয়ার একটা মজা আছে। বক্তাকে অনুসরণ করে যাও। দেখো কত অজানা নতুন রাস্তায় যাওয়া হয়ে যাবে। হয়ত রাস্তাটা আমার রাস্তার পাশাপাশিই ছিল, কিন্তু আমার খেয়াল করা হয়নি। অথবা সে গলিতে ঢোকার মুখটা খুঁজে পাইনি, সে গলির বাসিন্দাদের কথাবার্তা-চীৎকার-হাসি-কান্না কানে এসেছে কখনো সখনও আগেও, আমল দেওয়া হয়নি।
মাঝে মধ্যে পথ ছেড়ে বক্তা গোলকধাঁধাতেও নিয়ে গিয়ে ফেলে। একই পথে হেঁটে হেঁটে ঘুরে ঘুরে একই জায়গায় নিয়ে আসে। তখন পালাবার পথ খুঁজতেই হয়, উপায় কি নইলে?
তবে এই বইগুলো? সেখানে অবিশ্যি আমার নিজের কথা লেখক শুনবেন না। তার হাঁটা পথেই লেখকের পাশাপাশি যেতে হয়। আশেপাশে গলিঘুঁজি চোখে যে পড়ে না, তা তো নয়। তবে সে রাস্তায় হাঁটার দায়িত্ব সম্পূর্ণ নিজের। সে কথা আবার লেখক টের পান না।
এমন কত হাঁটা পথেই কান চলেছে, চোখ চলেছে। মন চলেছে পিছে পিছে, কখনও সমনোযোগী, কখনও বা অন্যমনস্ক। মানুষ কখনও ছাপা অক্ষর, কখনও উচ্চারিত। শুধু দুই প্রান্তেই মানুষ, এইটাই ধ্রুবসত্য।